দ্বিতীয় বারের জন্য মোদী সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই ‘ভক্ত’দের ‘রামরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে গোটা দেশ। দিকে দিকে যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে গেরুয়া বাহিনীর উৎপাত। তেমনই উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, আসাম-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘জয় শ্রীরাম’ হয়ে উঠেছে প্রহারের মন্ত্র। ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে আপত্তি জানালেই জুটছে ‘ভক্ত’দের হাতে বেধড়ক মার। আর তাদের নিশানায় মূলত দলিত থেকে শুরু করে সংখ্যালঘুরা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে গণপিটুনিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে হামেশাই। তবে এতদিন তো শুধু শারীরিক অত্যাচারের ঘটনা ঘটছিল, এখন একপ্রকার মানসিক অত্যাচারের ঘটনাও সামনে আসছে। যেমন এবার বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে দলিত হওয়ার কারণে এক পড়ুয়াকে শৌচালয় ব্যবহার করতে দেওয়া হল না!
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী অভিযোগ তুলেছেন যে, তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নিরাপত্তারক্ষী ক্যাম্পাসের শৌচালয়ে প্রবেশ করতে দেননি শুধুমাত্র তিনি দলিত বলে! এই ঘটনা ঘটার পর ওই ছাত্রী চিঠি লিখে অভিযোগ জানান। বলেন, নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যবহার অমানবিক ও অনৈতিক। এই ধরনের কোনও নিয়ম হতে পারে না কখনই। যদিও অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীরা সাফাই দিয়েছেন যে, দলিত হওয়ার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, ওই ছাত্রী পুরুষদের বাথরুমে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তাই তাঁকে আটকানো হয়েছিল। তবে এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন ওই ছাত্রী। উল্টে শোমা যাচ্ছে ওই নিরাপত্তারক্ষীরা বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলেই জানা গেছে।
অন্যদিকে, ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি তাঁদের তরফে জানান হয়েছে, অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের ইতিমধ্যেই সমন পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে তার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, এ কথাও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, যোগী রাজ্যে এ ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও দলিত হওয়ার ‘অপরাধে’ উত্তরপ্রদেশে কখনও পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন গ্রামবাসীরা। কখনও আবার কোনও দলিত কিশোরীকে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এবার ফের প্রকাশ্যে চলে এল দলিত-বিদ্বেষ।