বঙ্গদেশে তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। কিন্তু লাগাতার বর্ষণে প্রায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে আসাম। গুয়াহাটিতে ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা রাজ্যে অন্যান্য নদীগুলিরও। গত তিন দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। তাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। আসামে এখনও পর্যন্ত অতিরিক্ত বর্ষণে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে আট লক্ষ সাধারণ মানুষ। রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে জলমগ্ন ২১টি। তবে সংখ্যাটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিনের বৃষ্টিতে ৬৬ হাজার ৭১৮ একর চাষযোগ্য জমি বন্যার জলে চাপা পড়ে গিয়েছে। রাজ্য জুড়ে ৬৮টি ত্রাণ শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে সাত হাজার মানুষকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে খবর।
অন্য দিকে, কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কেও বন্যার জল ঢুকে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে পশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এখনই পরিস্থিতি উন্নতির কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সপ্তাহান্তে সেখানে ফের ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। যে কারণে শুক্রবার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কাজিরাঙা সংলগ্ন জাতীয় সড়কে যান চলাচলে নিয়েও কড়া বিধিনিষেধ চালু করেছে রাজ্য সরকার।
ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্যে নেমেছে সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলাকী সংস্থার বিশেষ দল। ৫৩টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ২০০০ লোককে উদ্ধার করে এনে রাখা হয়েছে। তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জলের তলায় থাকা অসমের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাকি বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ-এর বিশেষ দল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। আসামের যে জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ধেমাজি, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, সোনিতপুর, দারান্ড, বাকসা, বরপেতা, নলবাড়ি, চিরাং, বঙ্গাইগাঁও, কোকরাঝড়, গোয়ালপাড়া, মরিগাঁও, হোজাই, নগাঁও, গোলাঘাট, মাজুলি, জোরহাট, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া এবং শিবসাগর। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরপেটা।