যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন সন্ন্যাসী, সেখানে দাঁড়িয়েই কিনা নিগৃহীত হলেন আরেক সন্ন্যাসী। হ্যাঁ এমনটাই ঘটেছে উত্তর প্রদেশের লখনউতে। যোগীরাজ্যে আইনশৃঙ্খলার যে একেবারেই অবনতি ঘটেছে, তা বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সেখানকার বিভিন্ন ঘটনা। এই ঘটনার পর কেন্দ্রের কাছে নালিশ জানিয়েছেন বাংলার সেই সন্ন্যাসী। ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দের অভিযোগ তাঁকে ও তাঁর সঙ্গী তীর্থযাত্রীদের হেনস্থা করা হয়েছে বিজেপি শাসিত যোগী আদিত্যানাথের রাজ্যেই। লখনউতে অমরনাথ তীর্থযাত্রী স্বামীজি ও অন্যদের নিগ্রহের ঘটনায় তীব্র আলোড়ন ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অভিযোগ উঠেছে, আরপিএফ জওয়ানদের হাতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে অমরনাথ তীর্থযাত্রী এরাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ সহ তাঁর আরও ৯ জন সঙ্গীকে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন স্বামীজি। এর পাশাপাশি টুইট করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই লখনউ স্টেশনের আরপিএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে বেনারস থানায় এবং শিয়ালদহ থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিগৃহীত স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ ও অন্যান্য তীর্থযাত্রীরা।
জানা গেছে, স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ এবং বুনিয়াদপুর কলেজের প্রিন্সিপাল ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক তাঁদের পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন অমরনাথ দর্শনে। গত ১০ জুলাই জম্মু থেকে হামসফর এক্সপ্রেসে চেপে তারা শিয়ালদহ আসার জন্য রওনা হন। জম্মু থেকেই তাঁদের বগিতে সহযাত্রী হিসেবে দুই মহিলা-সহ চারজন উঠেছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে মাত্র ২ জনের সংরক্ষিত টিকিট ছিল৷ তবু তাঁরা জোর করে স্বামীজিদের আসন দখল করে রাখেন।
এরপরেই তাঁদের মধ্যে সামান্য বাক বিতণ্ডা হয়। সেই সময়ে ওই দুই মহিলার একজন নিজেকে আইআরএস অফিসারের স্ত্রী ও একজন নিজেকে আরপিএফ অফিসার বলে দাবি করেন। গভীর রাতে ট্রেন লখনউ স্টেশনে দাঁড়ালে ওই সহযাত্রীরা এবং জনা দশেক আরপিএফ জওয়ান ট্রেনে উঠে স্বামীজি-সহ অন্যান্যদের টেনে হিঁচড়ে ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে দেয় এবং তাদের উপরে শারীরিক নিগ্রহ চলে বলেও অভিযোগ। তারপরেই স্বামীজি তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান।