রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে ‘শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’ পত্র লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সহজ–সরল ভাষায় স্বল্প পরিসরে দেশের অতীত ও বর্তমানকে তুলে ধরে সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানো এই চিঠি ইতিমধ্যেই মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। বাংলার নাগরিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা এই খোলা চিঠি তৃণমূলের আগামিদিনের লড়াই ও কর্মসূচীতে অক্সিজেন জোগাবে বলে মনে করছেন তৃণমূলের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও।
পত্রের ছত্রে ছত্রে মমতা বাংলার মানুষের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘যখনই মানুষের অধিকারের দাবিতে আমরা পথে নেমেছি, তখনই সাথী হয়েছেন আপনারা।’ স্বীকার করেছেন, ‘আপনারা তৃণমূল কংগ্রেস ও মা মাটি মানুষের ওপর আস্থা রেখেছেন, আশীর্বাদ করেছেন, দোয়া দিয়েছেন এবং সাথে চলার অঙ্গীকার করেছেন।’ চিঠিতে মমতার ঘোষণা, ‘শুধু মূর্তি ভেঙে বাংলার মেরুদণ্ডকে দুর্বল করা যাবে না। বাংলা চলবে তার সংস্কৃতি মেনে, সোনালি অতীতের আদর্শ অনুকরণ করে।’ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, রামমোহন, বিবেকানন্দ, নজরুল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র, রামকৃষ্ণ, মহাত্মা গান্ধী প্রমুখ মনীষীর আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ করেছেন বীরসা মুণ্ডা, বিআর আম্বেদকর, আবুল কালাম আজাদ, ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকি, ভগৎ সিংয়ের অবদান। তাঁর বিশ্বাস, ‘আজও বাংলা শোষকের চোখে চোখ রেখে দৃপ্ত কন্ঠে গেয়ে উঠতে পারে বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দেমাতরম আর ছিনিয়ে নিতে পারে তার অধিকার।’
চিঠিতে বর্তমান ভারতের অবস্থা আর অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেছেন মমতা। লিখেছেন, ‘বিভেদপন্থা গ্রাস করতে চাইছে আমাদের ভারতকে। প্রান্তিক মানুষের আবেগকে বিপথে চালিত করার চক্রান্ত চলছে। ধর্মের কারবারের মূল্য চোকাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’ সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে মানুষের ‘আশীর্বাদ-দোয়া’ তৃণমূলের ‘জয়ের পাথেয় হয়ে উজ্জ্বলতায় আলোকিত করেছে কাঙ্ক্ষিত বিজয়কে’, এ কথা জানিয়ে মমতার দাবি, ‘আমি অন্তর থেকে বিশ্বাস করি ভোটযন্ত্রের যান্ত্রিকতার চাতুর্যে মা মাটি মানুষের রায়কে বেশিদিন বিভ্রান্ত করা যাবে না।’ বাংলার মানুষকে সঙ্গে নিয়েই ‘বাংলা জুড়ে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলবে’ জানিয়ে খোলা চিঠিতে মমতার আহ্বান, ‘আমাদের লড়াই বাংলার গণতন্ত্র বঁাচানোর লড়াই, মানুষের অধিকারের লড়াই। আসুন সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাই।’
চিঠির শেষে লেখা রয়েছে ‘বাংলা মোদের গর্ব’। আর চিঠি বিলির দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বাংলার গর্ব।’