বারবারই মোদী সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে অভিযোগ করে থাকে বিরোধীরা। এবার ফের এক ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগকেই মান্যতা দিয়ে দিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হওয়ার আগে, গোপনীয়তা রক্ষার খাতিরে বরাবরই অর্থ মন্ত্রকে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার সাময়িক ভাবে প্রত্যাহার করে সরকার। এবারও হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসে এই প্রথম, বাজেট পেশ হওয়ার পরেও তা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এখন থেকে নর্থ ব্লকে আগাম অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমের যাতায়াত নিষিদ্ধ। এমনকী সরকার অনুমোদিত, অর্থাৎ ‘অ্যাক্রেডিটেড’ সাংবাদিকেরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন।
উল্লেখ্য, এত দিন পর্যন্ত সাউথ ব্লক, অর্থাৎ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের ওপর জারি থাকত এই বিধিনিষেধ। আগাম অনুমতি না নিয়ে যাওয়া যেত না। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের ক্ষেত্রে তেমন কড়াকড়ি কখনও করা হয়নি। শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পরদিন থেকে এই নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে দেখে দিল্লীর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলি ‘অফ দ্য রেকর্ড’ রাখার অনুরোধ জানান সীতারামন।
সাংবাদিকেরা কথা রাখলেও মঙ্গলবার সীতারামনের দফতর টুইট করে জানায়, আগে থেকে সময় ও সম্মতি না নিয়ে সাংবাদিকেরা অর্থ মন্ত্রকে আসতে পারবেন না। সরকারি প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর অ্যাক্রেডিটেশন প্রাপ্ত সাংবাদিকদেরও আগাম অনুমতি নিতে হবে। ওই টুইট বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, সরকারি কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাতের পদ্ধতি আরও সহজ করতে, সাংবাদিকদের হয়রানি দূর করতেই এই পদক্ষেপ! এর ফলে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ দিল্লীতে কর্মরত সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বুধবার দুপুরে প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় মিলিত হন।
নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সাংবাদিকেরা ঠিক করেছেন, সাংবাদিকদের একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিষয়টি প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার নজরে আনা হবে। সেই সঙ্গে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হবে। তাতে কাজ না হলে অন্য পথে হাঁটবেন সাংবাদিকেরা। প্রতি বার বাজেট পেশের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান। এবার তা-ও বয়কট করা হবে। যদিও সূত্রের খবর, সাংবাদিকদের ক্ষোভপ্রকাশের পরও নিজের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন সীতারামন।