শহর কলকাতায় যাতে সকলে স্থায়ী আস্তানা পায় সেই বিষয়ে বরাবরই সচেষ্ট মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম৷ বস্তির গরিব ভাড়াটেও পেতে পারেন নিজস্ব ফ্ল্যাট। সেই সুযোগ করে দিতেই বিধানসভায় গৃহীত হল ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল ঠিকা টেনান্সি (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড রেগুলেশন) বিল ২০১৯’।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঠিকা টেনান্সি বিষয়ক বিলটি নিয়ে বিধানসভায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত বিপ্লব করে দিয়েছেন এই বিলে। তাঁরই নির্দেশে আমি এই বিল এনেছি। এই বিলের মূল কথা হল, এখন থেকে কলকাতার বিভিন্ন বস্তিতে বাস করা ঠিকা কন্ট্রোলার, ঠিকা টেনান্ট আর ভাড়াটিয়ার মধ্যস্থতায় গড়ে উঠতে পারে পাঁচতলা ফ্ল্যাট।
তিনি বলেন, এই বিলের ফলে বস্তিবাসী মানুষও এখন বলতে পারবেন, তিনি ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের বাথরুমে শাওয়ারের জলে স্নান করেন। মন্ত্রী জানান, চুক্তি হবে সরকারের মধ্যস্থতায়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ যেমন মিলতে পারে, তেমনি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন ‘আমার বাড়ি’ থেকেও সহায়তা পেতে পারেন।
এই বিলে থাকা জমি হস্তান্তর প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। ফিরহাদ হাকিম বলেন, চিন্তার কিছু নেই। সহযোগী পুর আইন আছে। ভাড়াটিয়ার ছাড়পত্র ছাড়া কেউ কিছু করতে পারবে না। তা ছাড়া ফাঁকা জমি হস্তান্তর করতে হলে এখন ক্যাবিনেটে পাশ করাতে হবে, যা আগে ছিল না। বিরোধীরাও এই বিলটিকে সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় বলে বর্ননা করেছেন।
মিউনিসিপ্যাল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল অনুযায়ী পুরসভার ভোটে নির্বাচিত না হয়েও একজন পুরসভার চেয়ারম্যান হতে পারবেন। তবে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে জিতে আসতে হবে কোনও একটি ওয়ার্ড থেকে। পুরসভার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, বিরোধী দলনেতা— সবাই মিলে বসে ঠিক করবেন তাঁদের মাসিক বেতন, ভাতা ইত্যাদি। সেই সঙ্গে সমস্ত পুরসভায় গড়া হবে হেরিটেজ কমিটি, হেরিটেজ সেল, যা এলাকার ঐতিহ্য স্থাপত্যগুলি সংরক্ষণ করবে। সেই সঙ্গে এই বিলে আছে, পুরসভা এলাকায় যেখানে–সেখানে থুতু বা পানের পিক ফেললে সরাসরি শাস্তি পেতে হবে পুর আইনে। এই বিল রাজ্য সরকারকে সেই ক্ষমতা দিল, যার ফলে পুরসভায় বসানো প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানো যাবে।
একই সঙ্গে এদিন বিধানসভায় পুরমন্ত্রী আরও একটি সংশোধনী এনেছেন ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৯’ নামে। যে পুরসভাগুলিতে হাওড়া পুরসভার মতো প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, সে প্রসঙ্গে।