গোটা দেশ ভয়াবহ জলসঙ্কটের মুখোমুখি৷ আশঙ্কায় এরাজ্যের ভবিষ্যতও৷ কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কমছে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর। এমনকি গত বর্ষাতেও জলে স্তর নেমে গিয়েছে। এতে চিন্তায় নবান্ন। উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ সচেতনতার বার্তা দিতে ১২ জুলাই জল বাঁচাও দিবস পালনের ডাক দিলেন তিনি৷
শনিবার এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। সেখানে জল সংরক্ষণের দাবিতে পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন মমতা৷ ১২ জুলাই জোড়াসাঁকো থেকে গান্ধিমূর্তি অবধি হাঁটবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ১২ জুলাই বেলা ৩টে থেকে শুরু হবে এই পদযাত্রা৷ জল বাঁচানোর দাবিতে এই পদযাত্রা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ইতিমধ্যেই ১২ জুলাইকে ‘জল বাঁচাও দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন মমতা। তিনি ‘সেভ ওয়াটার সেফ লাইফ’ স্লোগান তুলে সকলকে এই পদযাত্রায় সামিল হওয়ার ডাক দিয়েছেন।
এই পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে, দেশের জল সঙ্কটের কথা। পাশাপাশি জল সঙ্কট থেকে বাঁচতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানানো হয়েছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের মধ্যে দিল্লী, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই এবং হায়দরাবাদের মতো শহরে ভূগর্ভস্থ জল ফুরিয়ে যাবে৷ এ রাজ্যের ছবিটাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। রাজ্যের ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে প্রায় ৫০টি ব্লকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে গেছে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ নিয়ে সমীক্ষাও চালায় রাজ্য সরকার। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট সম্প্রতি নবান্নের হাতে এসেছে। সেই রিপোর্ট বলছে, ২০০১ সাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমতে শুরু করে। ২০১৫ সাল থেকে যা উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে ৷ ২০১৯ সালের রিপোর্ট চিন্তা আরও বাড়িয়েছে।
এ বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া – এই চার জেলায় বেশিরভাগ জায়গায় গ্রীষ্মকালে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ১৮ মিটার নীচে নেমে যায়। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, বর্ষাকালে যেখানে জলস্তর বাড়ার কথা, সেখানে গত বর্ষায়, এই চার জেলার বিভিন্ন জায়গায় জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে ৬ মিটার নীচে ছিল। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২ জুলাই দিনটিকে ‘জল বাঁচাও দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। জল সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে ওই দিনই পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন মমতা। সেইসব নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের পোস্ট।