বাঘ-সিংহ থেকে শুরু করে হাতি। গতির কবল থেকে রক্ষা পায়নি কেউ। গত তিন বছরে রেললাইন পেরোতে গিয়ে গতির বলি হয়েছে ৩২ হাজারেরও বেশি পশু। গরু, বাছুর, ছাগল, সিংহ, চিতাবাঘ-কী নেই ! শুধু ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্তই ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত পশুর সংখ্যা ছুঁয়েছে তিন হাজার ৪৭৯। শুধু তা-ই নয়, এই তালিকায় যোগ হবে আরো ৬০টি হাতি। যার মধ্যে পাঁচটি মারা গেছে এই বছরেই, বাকিগুলি গত তিন বছরে।
সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে মারা গেছিল ৭ হাজার ৯৪৫টি পশু। ২০১৭ সালে এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৬৮৩। ২০১৮ সালে ১২ হাজার ৬২৫। ফলে শেষ তিন বছরে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ২৫৩-তে।
রেলের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, সমস্যা সত্যিই বাড়ছে। গত কয়েক বছরে রেল দুর্ঘটনার হার কমলেও, বেশ বেড়ে গেছে রেলে কাটা পড়া পশুর সংখ্যা। ২০১৪-১৫ সালে সারা বছরে তিন থেকে চার হাজার পশুর রেলে কাটা পড়ে মৃত্যুর খবর আসত। এখন সেটা তিন-চার গুণ বেড়ে গেছে। এটা রেলের কাছে গুরুতর চিন্তার বিষয়।
এই বছরের গোড়াতেও নতুন ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনার দিন একটি গরু সামনে চলে আসায় মারা যায় সেটি। সেই সঙ্গে ট্রেনের সামনের দিকের যে ছুঁচলো অংশটি ফাইবার দিয়ে ঢাকা দেওয়া, সেটিও ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে লাগাতে হয়।
এই ধরনের ঘটনা এড়াতে, যে সব এলাকার রেল লাইন দিয়ে পশুরা যাতায়াত করে, সে সব জায়গায় রেল লাইন বরাবর বেড়া দেওয়ার কথা হয়েছে অনেক বার। কিন্তু সেই প্রকল্প কখনওই বাস্তবায়িত হয়নি। রেলকর্মীরাও স্থানীয় কৃষকদের বারবার সতর্ক করেছেন, তাঁরা যেন রেললাইনের আশপাশ থেকে তাঁদের পোষা গবাদি পশুকে সামলে রাখেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
রেলের সূত্রে তার সংখ্যাটা প্রকাশিত হতেই টনক নড়েছে ফের। তবে সমাধান কিছু হবে কি না, তা সময়ই বলতে পারবে।