স্কুলে ‘ডাইনিং হল’ বিতর্কের অবসান ঘটাল রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্কুলে কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য ‘ডাইনিং হল’ বা খাওয়ার ঘর তৈরির কোনও পরিকল্পনা সরকারের ছিল না, এখনও নেই।
রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরও প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানাল, এ বছর স্কুল শিক্ষা দফতর স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল খাওয়ার ঘর তৈরির জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করার পরেও চাহিদা মেটেনি। তাই সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতর এ কাজে আরও টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইভাবে তফশিলি জাতি-উপজাতি অঞ্চলে অগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরও এ কাজে টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু ওই টাকায় যে পরিকাঠামো গড়া হবে, তার সুবিধা পাবে সব পড়ুয়ারাই।
উল্লেখ্য, কোচবিহারের বিভিন্ন স্কুলে কোথায় কত বিশেষ সম্প্রদায়ের পড়ুয়া রয়েছে, তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। কারণ, স্কুলের সামগ্রিক পরিকাঠামো তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত টাকা শুধু স্কুল দফতর থেকে দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই রাজ্যের বিভিন্ন দফতর থেকে বিভিন্ন নিয়ম মেনে টাকা দেওয়া হয় উন্নয়নের জন্য। এক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনেই ৭০ শতাংশের বেশি বিশেষ সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রী যে সমস্ত স্কুলে রয়েছে সেখানে মিড ডে মিলের খাওয়াদাওয়ার জন্য ডাইনিং রুম বানানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে এই সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশিকা বিকৃত করে শুধুমাত্র বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা ডাইনিং রুম বানানো বানানো হচ্ছে বলে টুইট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বহু বিজেপি নেতাও তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের তোষণকারী বলে অভিযোগ করতে থাকেন।
এই খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা থেকেই ফোনে ওই দপ্তরের সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। নির্দেশ দেন, এখনই প্রেস রিলিজ করে সমস্ত বিভ্রান্তি কাটাতে হবে। এরপরেই প্রেস রিলিজ করে জানানো হয়েছে, ৪৬৪৭ টি প্রাইমারি স্কুল ও ১৫২৪ টি আপাম প্রাইমারি স্কুলে ডাইনিং হল তৈরির জন্য ২০০ কোটি অনুমোদন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৯.৭২ কোটি টাকা খরচ করে জঙ্গলমহল ও সুন্দরবন এলাকায় ৯৬৯ টি স্কুলেডাইনিং হল তৈরি করা হয়েছে। অন্যান্য জায়গায় ১৫৭০ টি ডাইনিং হল তৈরি করা হয়েছে। আরও চাহিদা রয়েছে। এ জন্যই সংখ্যালঘু দপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তর থেকে টাকা অনুমোদন করে সেই অতিরিক্ত চাহিদা মেটানো হচ্ছে। সমস্ত স্কুলের ডাইনিং হলই ধর্ম-জাতি- সম্প্রদায় নির্বিশেষে ছাত্রছাত্রীরা ব্যবহার করবে।