বিশ্বকাপের ম্যাচে বড়সড় অঘটন ঘটিয়ে ‘ফেভারিট’ ইংল্যান্ডকে ২০ রানে হারিয়ে রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নিল লঙ্কাবাহিনী।
ধারে-ভারে শ্রীলঙ্কার চেয়ে কয়েক যোজন এগিয়ে থেকেই শুক্রবার বিশ্বকাপের ম্যাচে খেলতে নেমেছিল মর্গ্যান ব্রিগেড। প্রথম ৫ ম্যাচের ৪টিতে জিতে প্রত্যাশামতোই টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করেছিল ইংরেজরা। অন্যদিকে আফগানিস্তানকে হারালেও শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে চলতি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার অবস্থাও ছিল তথৈবচ। তাই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে ‘ফেভারিট’ ইংল্যান্ডের ধরাশায়ী হওয়াকে চলতি বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় অঘটন বলতেও কার্পণ্য করছেন না ক্রিকেট মহলের বিশেষজ্ঞরা।
সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে আজকে জয় দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। এমতাবস্থায় লিডসে এদিন টস ভাগ্য সঙ্গ দেয় তাঁদের। টস জিতে অধিনায়ক করুণারত্নে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত কার্যত ব্যুমেরাং হয়ে ফেরে শুরুতে। মাত্র ৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে এদিন শুরুতেই চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে দলকে কিছুটা টেনে তোলে আবিষ্কা ফার্নান্দো ও কুশল মেন্ডিস জুটি। অর্ধশতরান থেকে মাত্র ১ রান দূরে আউট হন আবিষ্কা।
তৃতীয় উইকেটে মূল্যবান ৬০ রান যোগ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কা ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন কুশল মেন্ডিস ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। শেষমেষ একক প্রচেষ্টায় দলের রানকে ২৩২-এ পৌঁছে দেন তিনি। ১১৫ বলে ম্যাথিউজের অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস এদিন সাজানো ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়ে। আর্চার-উড-রশিদের সামলে তাঁর লড়াকু ব্যাটিং কিছুটা হলেও লড়াইয়ের রসদ এনে দেয় তাঁর দলকে। এরপরেই মালিঙ্গার নেতৃত্বাধীন বোলিংয়ে ব্রিটিশ বধের স্বপ্ন দেখা শুরু করে লঙ্কানরা।
২৩৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে মালিঙ্গার দাপটে ২৬ রানেই দুই ওপেনারের উইকেট খুঁইয়ে বসে ইংল্যান্ড। কিন্তু অধিনায়ক মর্গ্যানকে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জো রুট। তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ২১ রানে ফেরেন মর্গ্যান। এরপর বেন স্টোকসকে সঙ্গে নিয়ে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করার পাশাপাশি ৫৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন রুট। তবে অর্ধশতরানের পর ইনিংস খুব বেশি দীর্ঘায়িত করতে পারেননি তিনিও। ৫৭ রানে মালিঙ্গার বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রুট।
এরপর ব্যাট হাতে বেন স্টোকস ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকলেও শ্রীলঙ্কার বোলারদের দাপটে বড় পার্টনারশিপ গড়তে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। ধনঞ্জয় ডি’সিলভা, উদানাদের দাপটে একে একে ফিরে যেতে থাকেন জোস বাটলার, মইন আলি, ওকসরা। যার ফলে ক্রমশঃ রানের পাহাড় মাথায় চাপতে শুরু করে ইংল্যান্ডের।
তবে একা কুম্ভ হয়ে বেন স্টোকস ৮৯ বলে ৮২ রান করে অপরাজিত থেকে যান। কিন্তু ৭টি চার, ৪টি ছয়েও ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি তিনি। মালিঙ্গার ৪ উইকেটের পাশাপাশি ৩ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ধনঞ্জয় দি’সিলভা। ২টি উইকেট নেন ইশুরু উদানা ও ১টি উইকেট নুয়ান প্রদীপের দখলে। এদিন লিডসে বল হাতে মালিঙ্গার নেতৃত্বে দর্পচূর্ণ হলো ব্রিটিশদের। অন্যদিকে এই জয়ের ফলে ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশকে টপকে পাঁচে উঠে এল শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে ম্যাচ হেরে শীর্ষে যাওয়ার সুযোগ খোয়ালো ইংল্যান্ড।