গত পাঁচ বছরের মোদী সরকারের ব্যর্থতাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল কৃষক সমস্যা। তাই দ্বিতীয়বার মসদনে এসেই বেকার সমস্যা থেকে কৃষক সমস্যার মতো বিষয়গুলো বড় কাঁটা মোদী সরকারের। আর তা ঠিক করতে মোদী আবার এক ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছেন দেশের কৃষকদের উদ্দেশ্যে। তিন বছরের মধ্যে ভারতের কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মোদী সরকার। তবে এই ঘোষণা কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের কাছে তার ব্যাখ্যা চাইল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কী ভাবে কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন খাতে ২৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল, কী ভাবে ধরে নেওয়া হল পাঁচ বছরে ওই খাতে বরাদ্দ করা যাবে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
শুধু ভারতেরই নয়, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউটিও) সদস্যরা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কৃষি নীতিও। প্রশ্ন তুলেছে। সোমবার জেনেভায় ডব্লিউটিও-র বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ ওই প্রশ্ন তুলেছে। ভারত ও আমেরিকার ব্যাখ্যাও চেয়েছে।
চিনের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কিছুটা থমকে যাওয়া মার্কিন অর্থনীতির উপর থেকে মানুষের নজর ঘোরানোর লক্ষ্যে কৃষকদের উপর তাঁর ‘সহানুভূতি’ প্রকাশের চেষ্টা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তাঁর নতুন কৃষি নীতির মাধ্যমে। এ দিকে, ভারতের অর্থনীতিতেও ততটা তেজি ভাব নেই। তবু কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশে কৃষকদের রোজগার আগামী তিন বছরে দ্বিগুণ করার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেটা কী ভাবে সম্ভব হবে, ডব্লিউটিও-র বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ কয়েকটি দেশ তা ভারত ও আমেরিকার কাছে জানতে চেয়েছে।
বৈঠকে আমেরিকার কৃষি নীতি নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নিউজিল্যান্ড ও ইউক্রেন, তেমনই বাসমতী ছাড়া অন্য চাল রফতানিকে উৎসাহ দিতে ভারত যে ৫ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ডব্লিউটিও-র বৈঠকে। এখানেই ইইউ-র তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘বাড়তি কৃষি উৎপাদন কমাতে যখন গোটা বিশ্বে ফসল উৎপাদনের সর্বোচ্চ মাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, বেঁধে দেওয়া হয়েছে তাদের বাজার-মূল্য, তখন এটা কী ভাবে সম্ভব হবে?’ এইভাবে প্রশ্নের প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রশ্নের মুখে পড়ায় হকচকিয়ে গেছে মোদী সরকার।