‘গত বিধানসভা ভোটে বিকাশ বসুর স্ত্রী মঞ্জু বসুকে টিকিট না দেওয়া দলের ভুল হয়েছিল’৷ মঙ্গলবার তৃণমূল কাউন্সিলারদের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি জানান, ‘আমাদের কর্মী ছিলেন বিকাশ বসু। সিপিএম আমলে তাঁকে মার্ডার করা হল। বিচার পেল না। তাঁর স্ত্রীকে টিকিট না দেওয়াটা দলের ভুল ছিল’।
প্রসঙ্গত, নোয়াপাড়ার তৃণমূল নেতা বিকাশ বসু খুন হয়েছিলেন ২০০০ সালের পয়লা এপ্রিল। সেই খুনের ঘটনায় প্রকৃত দোষীরা এখনও অধরা। ওই খুনের ঘটনার পর কেটে গেছে ২০ বছর। বিকাশ বসুর স্ত্রী মঞ্জু বসু দু’বারের তৃণমূল বিধায়কও হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই। ২০১১ সালে নোয়াপাড়াতে জেতার পর ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁকেই প্রার্থী করেছিল দল। কিন্তু তৃণমূলের ভরা বাজারেও বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে যান। এরপরে ২০১৭ সালে জয়ী বিধায়ক মধুসূদন ঘোষের মৃত্যু হলে ২০১৮ সালে জানুয়ারিতে ওই কেন্দ্র উপনির্বাচন হয়। সেই সময়ে সুনিল সিং-কে প্রার্থী করে তৃণমূল। সেই সময়েই প্রার্থী হিসেবে মঞ্জু বসুর নাম ঘোষণা করে বিজেপি। কিন্তু নিজেকে তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করে সেই প্রার্থীপদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মঞ্জুদেবী। তৃণমূল প্রার্থী সুনীল সিং সেই উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছিলন। যিনি বর্তমানে বিজেপিতে।
২০১৪-য় লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরও কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন দলনেত্রী। কিন্তু, এ বারের পরিস্থিতি একটু অন্য রকম। বিজেপি এবার লোকসভা ভোটে এ রাজ্য থেকে ১৮টি আসন পেয়েছে। উপরন্তু কেবল কলকাতা নয়, আশপাশের কয়েকটি এলাকাতেও শাসকদলের শক্তি কমেছে। এমন সময়ে, কড়া বার্তার পাশাপাশি লোকসভা ভোটের ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’র জন্য কাউন্সিলরদের বাড়তি কাজের জন্য ‘টনিক’ দিলেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি দলের পুরনো কর্মীর স্ত্রীকে টিকিট না দেওয়া যে ভুল ছিল, সেটা কাউন্সিলারদের বৈঠকে স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের বৈঠকে কাউন্সিলারদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষা করতে হবে। নিজের নিজের এলাকা ভালো রাখুন। ঠিকমতো পরিষেবা দিন। ডেঙ্গি রুখতে ভালো ভাবে প্রস্তুতি রাখতে হবে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনায় কয়েকটা পকেটে ডেঙ্গি বেশি হয়। সেখানে এখন থেকেই অ্যাকশন নিতে হবে। মনে রাখবেন, এলাকায় ভালো কাজ না হলে, দোষ পড়ে দলের উপর। ভালো কাজ হলে দলের সুনাম বাড়ে’।