এনআরএসে জুনিয়ার ডাক্তারের ওপর হামলার প্রতিবাদে গত সাতদিন ধরে অচলাবস্থা রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার। জুনিয়ার ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালগুলির সব পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসা করতে আসা একাধিক রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। এইকয়দিনে চাপান-উতর চলছেই। দেশ জুড়ে উত্তাল আন্দোলন, রাজ্যে রাজ্যে কর্মবিরতির মাঝেই মানবিকতার ছন্দে ফিরল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
রক্ত সংকট মেটাতে গত রবিবারই স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন এই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা, সোমবার অবস্থান মঞ্চেই আউটডোর পরিষেবা চালু করে দিলেন ডাক্তাররা। সোমবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ অন্য রূপে দেখা গেল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যালকে। একদিকে চলছে কর্মবিরতি, অন্যদিকে হাসপাতাল চত্বরেই ক্যাম্প করে রোগী দেখা শুরু করলেন ডাক্তাররা। চালু হলো জরুরি পরিষেবাও। সোমবার বাঁকুড়া সন্মিলনীর আউটডোর খোলা পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন অনেক রোগীই। তাঁদের কথায়, “অবস্থান মঞ্চেই রোগী দেখছেন ডাক্তার-নার্সেরা। গত কয়েকদিনের সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই মিলল।”
ডঃ দেবজ্যোতি সাঁতরার কথায়, ‘সিনিয়র, জুনিয়র, ইন্টার্নরা সকলেই এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসা পরিষেবা চালু হয়ে গেছে। ডাক্তার নিগ্রহের প্রতিবাদ থেকে আমরা সরে আসিনি, কিন্তু আমরাও তো ডাক্তার তাই মুমূর্ষু রোগীকে ফেলে দিতে পারি না। সকলেরই প্রাণ বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের।’
এ দিন সকাল থেকে হাসপাতালের বাইরে দেখা গেছে রোগীদের লম্বা লাইন। দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা এসে লাইন দিয়েছেন হাসপাতাল চত্বরে।
তবে রাজ্যের অচলাবস্থা এখনও কাটেনি। জেলায় জেলায় সার্বিক ছবিটাও এক। এ দিনই সকালে মালদা মেডিক্য়াল কলেজে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে সাপে কাটা এক শিশুর। শিশুমৃত্যুর খবর মিলেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়ালেও। এর মধ্যেই বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের এই অন্যরকম চিত্র স্থানীয় মানুষকে স্বস্তি দিচ্ছে। এই কর্মবিরতির জেরে ধুঁকতে বসেছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা। শুধু তাই নয়, সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই ছিল চরম। বিনা অপরাধে, বিনা চিকিৎসায় প্রাণ গেছে অনেকেই।