‘বিজেপিকে এই ক’দিনেই মানুষ চিনে গিয়েছে। ক্ষমতায় না আসতেই আসল চেহারা বেরিয়ে গিয়েছে ওদের। মানুষ বুঝছে, কাকে দেওয়া হয়েছে রাজার পার্ট।’ এক বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঠিক এই ভাষাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা জিতেছিলাম। কিন্তু কিছু করিনি। আর এবার ক’টা আসন জিতে বিজেপি সন্ত্রাস করছে রাজ্যে। এগারোজন মানুষ খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের ন’জন।’
বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের বিরুদ্ধে তাঁর বার্তা, ‘হিন্দু-মুসিলম নিয়ে আমরা ভেদাভেদ করি না। ধর্ম নিয়ে আমায় জ্ঞান দেওয়ার দরকার নেই। আমি রোজ সকালে চণ্ডীপাঠ করে রাস্তায় বের হই। বিজেপির এই রাজনীতি বাংলায় চলবে না।’ প্রসঙ্গত, একদিকে যখন আইনশৃঙ্খলাকে ইস্যু করে কোনও কোনও বিজেপি নেতা যখন এ রাজ্যে ৩৫৬-র প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করছেন, তখন সেই দাবিকে একেবারেই নস্যাৎ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, ‘আমি তো ক্ষমতায় আছি। আমি কেন সন্ত্রাস করব? শাসক দল কখনও সন্ত্রাস করে?’
একইসঙ্গে তিনি এ-ও বলেন যে, ‘বাংলার দিকে নজর ঘোরানো হচ্ছে। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে কী হচ্ছে কেউ দেখায় না। পঁচিশজন যাদবকে খুন করা হয়েছে। তা নিয়ে কোনও খবর নেই। আর এ রাজ্যে পুরো মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। মদ খেয়ে মরে যাচ্ছে, আত্মহত্যা করছে, তা-ও তাকে শহীদ বানিয়ে দেওয়ার হচ্ছে।’ রাজ্যপালের সর্বদল বৈঠক ডাকার প্রসঙ্গেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘সর্বদল ডাকার মতো পরিস্থিতি হয়নি।’
আবার রাজ্যে বিজেপির ১৮ আসন জেতার প্রসঙ্গে মমতার তোপ, ‘বিজেপির ২৩টি আসনই পাওয়ার কথা ছিল। কারণ ওই ২৩টি আসনের ইভিএম-এ আগে থেকে প্রোগ্রামিং করা ছিল। আমরা বেশি ভোট পেয়ে যাওয়ায় জিতে গেছি। তবে গোটা দেশে ওইভাবে ৩০০ আসন জিতেছে বিজেপি। আমরা ২৩টি পার্টি এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের বক্তব্য শোনা হয়নি।’ মমতার কথায়, ‘এমন একটা ভাব করা হচ্ছে বিজেপি যেন জিতে গিয়েছে। এখনও আমাদের মেজরিটি আছে। তবে ওই আঠারো আসনে ভোট না দিয়ে আমাদের টনক নড়িয়েছেন মানুষ। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ২০২১ আমরা জিতে নেব।’