আজ বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দ্য রোজ বোওল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হতে চলেছে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড ও দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিযোগিতার অন্যতম ফেভারিট হিসাবে অভিযান শুরু করেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হোঁচট খেয়েছে ইংল্যান্ড। তিনটি খেলে তারা জিতেছে দু’টি ম্যাচ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফর্ম করলেও সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র একটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। ক্যারিবিয়ানদের ঝুলিতে এখন রয়েছে তিন পয়েন্ট।
এ বার সাউদাম্পটনে এই দুই দলের সম্মুখসমরে ইংল্যান্ডের অন্যতম শক্তি পেসার জোফ্রা আর্চার। যাঁর জন্ম বারবাডোজে। খেলার কথা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়েই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। জোফ্রা ঢুকে পড়েছেন ইংল্যান্ড দলে। বিশ্বকাপের সেই ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে প্রশ্নটা। তা হল, জন্মভূমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে মানসিক ভাবে সমস্যা হবে না তো আর্চারের? যা শুনে ইংল্যান্ড অধিনায়ক অইন মর্গ্যান বলে দিয়েছেন, ‘‘জোফ্রার কোনও সমস্যা হবে না। ও ঠিক সামলে নেবে।’’
চলতি বছরে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন জোফ্রা। আইপিএলের পরে বিশ্বকাপেও সেরা ছন্দে বল করছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে আর্চার বলছেন, ‘‘জোফ্রা দলের অন্যতম ধারাবাহিক ক্রিকেটার। হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওর খেলার সম্ভাবনা ছিল। প্রথম বার সেই জন্মভূমির বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে তাই আবেগগত কিছু সমস্যা হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু আমি নিশ্চিত সেই সমস্যা ঠিক সামলে উঠবে ও।’’
তবে জোফ্রা আর্চারের পাশাপাশি ইংল্যান্ড শিবিরে চিন্তা মার্ক উডকে নিয়ে। কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে তাঁর ফিটনেস সমস্যা ভোগাচ্ছে দলকে। গোড়ালির চোটে কাবু উড। ২৯ বছরের এই পেসার এই বিশ্বকাপে চার উইকেট নিয়েছেন এ পর্যন্ত। গত শনিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১০৬ রানে জেতে ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচে খেলতে নেমে গোড়ালিতে চোট পান তিনি। ফলে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে উডের নামা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। উড যদি না খেলতে পারেন শেষ পর্যন্ত তা হলে সেটা ইংল্যান্ডের কাছে একটা বড় ধাক্কা। ইংল্যান্ড দলে সদ্য বাবা হয়েছেন মইন আলি। তবে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে নামার জন্য তিনি তৈরি রয়েছেন। অন্য দিকে, উইকেটকিপার জস বাটলার দিন কয়েক আগে কোমরের চোটে কাবু ছিলেন।
ক্রিকেটে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের লড়াই ঘিরে দর্শকদের বরাবরই যথেষ্ট আগ্রহ থাকে। আর বিশ্বকাপের আসর বলে বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়ছে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই ইংল্যান্ড দলে দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু অনেক হিসাব উলটে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফেব্রুয়ারিতে দুই দলের মধ্যে একদিনের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে শেষ হয়েছিল। দারুণ ব্যাট করেছিলেন ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইল। এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। ক্যারিবিয়ান বাঁ-হাতি ওপেনারটি ক্রিজে একবার দাঁড়িয়ে গেলে রানের বন্যা বইয়ে দিতে পারেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় চিন্তা আন্দ্রে রাসেলের চোট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে রাসেলকে প্রথম একাদশে রাখা হয়নি। তিনি এই ম্যাচেও খেলতে পারবেন কি না তা কিন্তু স্পষ্ট নয়। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের তুলনায় পেস বোলিং যথেষ্ট শক্তিশালী। কার্লোস ব্রেথওয়েট, জ্যাসন হোল্ডার, ওসেন টমাস ও শেল্ডন কটরেল গতির সঙ্গে বাউন্সকে হাতিয়ার করে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলতে পারেন। তবে ক্যারিবিয়ান ব্রিগেডের অভিজ্ঞতা কম। সেদিক থেকে তারা কিছুটা পিছিয়ে। তবে ক্রিস গেইল, সাই হোপ, ড্যারেন ব্র্যাভো, নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমায়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা। যদি আন্দ্রে রাসেল না খেলতে পারেন, তাহলে ইংল্যান্ড কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে।