মঙ্গলবার রাতে, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির খয়রামারি পঞ্চায়েতের বড়বিলা এলাকায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে খুন হলেন আরেক সিভিক ভলান্টিয়ার। ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও দু’জন ভিলেজ পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সিভিকের নাম সজিবুর রহমান। বয়স ২৯। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলঙ্গিতে। সূত্রের খবর, তরোয়াল দিয়ে কোপানোর ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে সজিবুরের। মৃতের বাবা আসগড় আলি শেখ জানান “রাতে ডিউটি করার জন্য বেরিয়েছিল। অনেক রাতে শুনি, ছেলে খুন হয়েছে। কে বা কারা কেন খুন করেছে বলতে পারব না। সব জানে ওর সঙ্গে থাকা টিঙ্কু শেখ।” জানা গিয়েছে বাবা এবং ভাই ছাড়াও সজিবুরের স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।
সজিবুরের বাড়ি জলঙ্গির ফকিরাবাদে। গুরুতর জখম হওয়া ওই ভিলেজ পুলিশের নাম জাহাঙ্গির আলম। তাঁর বয়স ৩০। তবে, প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় টিঙ্কু শেখ নামে আরেক আহত ব্যক্তিতে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার মোতাহার শেখ ও ছাবের শেখকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, গুরুতর জখম অবস্থায় স্থানীয় মানুষেরা জাহাঙ্গির ও টিঙ্কুকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী সাদিখাঁর গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জাহাঙ্গিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন তাঁকে। তবে, সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার সকালে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। জখম ভিলেজ পুলিশ জাহাঙ্গিরের বয়ানে জানা গিয়েছে, সজিবুর রহমান, টিঙ্কু শেখ ও জাহাঙ্গির আলম খবর পান যে বড়বিলা এলাকা দিয়ে পাচারকারীরা গবাদি পশু নিয়ে যাচ্ছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই বড়বিলা এলাকায় যান তাঁরা।
জাহাঙ্গির বলেন, “আমরা তিনজনে মিলে এক জোড়া মোষ ধরেছিলাম। মোষটি ছিল ছাবের শেখের। মোষ ধরে ওসি স্যারকে জানালে তিনি মোষজোড়া খোঁয়াড়ে দিয়ে দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পরে খোঁয়াড়ের মালিক এসে মোষ খুলে নিতে যায়। ওই সময় অপরিচিত একজনকে সঙ্গে নিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতাহার শেখ হাঁসুয়া হাতে ঘটনাস্থলে এসে এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে। আর ওর সঙ্গে থাকা সেই লোকটি আমাকে লাঠি দিয়ে মেরেছে।” রক্তাক্ত অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে যাওয়ার পথে জাহাঙ্গির আলম তাঁর নিকটজনদের কাছে বয়ান দেন। তাঁর দেওয়া বয়ানে ওই ভিলেজ পুলিশ আরও জানান, “আমি স্পষ্ট দেখেছি মোতাহার মারছে। মোতাহারকে বারবার নিষেধ করেছি না মারার জন্য। তাও শোনেনি।”