মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর’ পোস্টের অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে একহাত নিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষন, এরকম ঘটনা ও এরকম গ্রেফতারি আগে দেখা যায়নি৷ অবিলম্বে সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য যোগীকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করায় গ্রেফতার করা হয় ওই সাংবাদিককে৷ ধৃত প্রশান্ত কানোজিয়া ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক৷ তাঁর বিরুদ্ধে হজরতগঞ্জ পুলিশ থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়৷ অভিযোগে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে ট্যুইটার ও ফেসবুকে ওই পোস্ট শেয়ার করেছেন সাংবাদিক৷ তাঁর বিরুদ্ধে আইপিসি’র ৫০০ ও আইটি অ্যাক্টের ৬৬ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়৷
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করে, ঠিক কোন অভিযোগে ও কিসের ভিত্তিতে ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা জানাতে হবে উত্তর প্রদেশ সরকারকে৷ প্রসঙ্গত, গত ১১ দিন ধরে জেলে রয়েছেন প্রশান্ত কানোজিয়া৷ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জী ও অজয় রস্তোগীর অবসরকালীন বেঞ্চ এদিন এই প্রশ্ন তুলে ধরে যে কেন ওই সাংবাদিক জেলে রয়েছেন? প্রশান্ত কানোজিয়ার স্ত্রী জিগিষা অরোরার আইনজীবী নিত্যা রামকৃষ্ণন এদিন সুপ্রিম কোর্টে জানান এই গ্রেফতারি অবৈধ ও অসাংবিধানিক৷ তবে এর পালটা উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষের আইনজীবী প্রশান্তের জামিনের বিরোধিতা করে আবেদন করেন৷ তখনই সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে উত্তর প্রদেশ সরকার৷ কি কারণে ওই সাংবাদিক এতদিন ধরে জেলে তা জানতে চান বিচারপতিরা৷ গোটা ঘটনায় স্বচ্ছতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে এদিন মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চ৷
এই মামলার শুনানিতে আদালত মঙ্গলবার বলে, ‘সাংবাদিকের টুইটকে আমরা সমর্থন করছি না, তবে কীভাবে তাঁকে জেলে ভরা হল? নাগরিকদের স্বাধীনতার সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়। এটা সংবিধানে স্বীকৃত আর কোনওভাবেই তা খর্ব করা যাবে না’। এরপরেই ওই সাংবাদিককে মুক্তির নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
সাংবাদিক গ্রেফতারের নিন্দা করে সমাজবাদী পার্টি একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আইনের শাসন ফেরাতে ব্যর্থ যোগী সরকার৷ সাংবাদিক গ্রেফতারে সেই হতাশাই প্রকাশ পেল৷