লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই কুকথা ও বিতর্কিত মন্তব্যের ফোয়ারা ছুটছে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের মুখ থেকে। ভোট ঘোষণা এবং ভোট শুরুর পর তার পরিমাণ আরও বাড়ে। যেমন মালেগাঁও বিস্ফোরণের মতো গুরুতর ঘটনায় অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর প্রার্থী হিসেবে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে পা রাখার দিন থেকেই মুখ খুলে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। কিন্তু ভোট মিটে গেলেও মেটেনি নেতাদের অশালীন মন্তব্যের বর্ষণ। প্রত্যেকটি ধর্ষণের নাকি একটা ‘ধরন’ আছে। এবার উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের এক মন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছেন উত্তরপ্রদেশের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী উপেন্দ্র তিওয়ারি।
তিওয়ারি বলেন, ‘ধর্ষণের একটা ধরন আছে। যখন কোনও নাবালিকা ধর্ষিত হচ্ছে, তখন সেটাকে ধর্ষণ হিসেবেই ধরা উচিত।’ পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন, ‘আমরা অনেক সময় শুনি ৩০-৩৫ বছরের কোনও বিবাহিত মহিলা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আবার এমনও শোনা যায়, ৭-৮ বছর একটা প্রণয়ের সম্পর্ক চলার পরও ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এ সব ক্ষেত্রে প্রথম দিকেই অভিযোগটা তোলা উচিত, এত দিন পরে নয়।’ তাঁর এই মন্তব্যের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরই নানা মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
আলিগড়ের শিশু খুনের ঘটনা নিয়ে যখন উত্তাল গোটা দেশ, উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে যখন প্রবল সমলোচনার ঝড় উঠছে, ঠিক সেই সময়েই তাঁরই এক মন্ত্রীর এমন বেফাঁস মন্তব্য যোগী আদিত্যনাথের অস্বস্তি আরও বাড়াল বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জুনের প্রথম সপ্তাহেই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাবালিকা খুনের চারটি ঘটনা ঘটে। পুলিশের রিপোর্ট অন্তত তেমনটাই বলছে। সেই চারটি ঘটনার মধ্যে রয়েছে আলিগড়ের দু’বছরের শিশুকন্যার খুনের ঘটনাটিও। গত ২ জুন ওই শিশুটির ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ধর্ষণ করেই খুন করা হয়েছে শিশুটিকে। এই পরিস্থিতিতে এমন একটা সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কীভাবে এমন অবিবেচকের মতো মন্তব্য করতে পারলেন যোগীর মন্ত্রী! উঠছে এমন প্রশ্ন। যার ফলে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।