নৃশংসভাবে নিমতায় খুন হয়েছেন তৃণমূল নেতা নির্মল কুন্ডু। বিজেপি দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে বলে অভিযোগ এনেছেন তাঁর স্ত্রী বর্ণালী কুণ্ডু। গতকাল নিহত নেতার বাড়িতে গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল বাদে যে আর কোনও রাজনৈতিক দলের বাড়িতে প্রবেশ তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন বর্ণালী।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নিমতা থানা এলাকার পাটনাপাড়ায় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন নির্মলবাবু। আচমকাই জনবহুল সেই এলাকায় মোটর সাইকেলে করে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ীরা। গুলি লাগে তাঁর কাঁধে ও মাথায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে হকচকিয়ে যান আশেপাশের মানুষজন। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন তাঁরা। ঘটনা জানতে পেরে ছুটে আসেন নির্মলবাবুর প্রতিবেশী ও স্বজনরা। তাঁরাই তড়িঘড়ি তাঁকে তুলে উত্তর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে উদ্ধার করেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবার রাত থেকে একাধিক অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে নির্মলের পরিবারে। সেই সমস্ত ফোনগুলিতে হুমকি দেওয়া হয় খুন করা হবে নির্মলের ভাই গোপাল কুন্ডুকেও। ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই থানার দ্বারস্থ হয়েছে নিহত নির্মলের পরিবার।
উত্তর দমদম শহর তৃণমূলের সভাপতি বিধান বিশ্বাস বলেন, “নির্মল কুন্ডুর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আবার কোনও গন্ডগোল ঘটাতে পারে”। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নির্মলের পরিবারের পাশে আছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দুই মেয়েকে চাকরি দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে।
আকস্মিক এই ঘটনায় পায়ের তলার মাটি সরে গেছে নির্মলের স্ত্রী বর্ণালির। তিনি জানিয়েছেন, “ প্রধানমন্ত্রীকে বলব উনি যা বলছেন বাস্তবে তার বিপরীত ঘটনা ঘটেছে। তাই রাজ্যে রাজ্যে লোক কেনা বন্ধ হোক। এভাবে আর যাই হোক, রাজনীতি করা যায় না”। তিনি আরও জানাচ্ছেন, “ বাড়ির সামনে লাশ ফেলে ওরা দেখিয়ে গেল ওরা কতটা গুণ্ডামি করতে পারে”।
এদিন গোটা জেলায় কালাদিবস পালন করেছে তৃণমূল। খুনের সমাধান যেমন প্রশাসনিক দিক থেকে হবে তেমনই ঘটনাটিকে যে রাজনৈতিক ভাবেও মোকাবিলা করা হবে তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে ভাড়াটে খুনি। ধৃত সুমন কুন্ডুই যে ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে এই কথাই উঠেছে জেরায়।পুলিশের ধারণা এই ঘটনায় শুধুমাত্র ২ জন নয়, আরও বড় কোনও চক্র রয়েছে। রহস্যের সেই সমাধান করতে দ্রুত সুমনকে জিজ্ঞাসা করতে চায় পুলিশ।