প্রথম ম্যাচেই ভারতীয় বোলারদের দুরন্ত পারফরম্যান্স। প্রোটিয়া শিবিরে প্রাথমিক ধাক্কাটা দিয়েছিলেন জসপ্রিত বুমরা। বাকি কাজটা সেরেছেন যুজবেন্দ্র চাহাল। ম্যাচ শেষে বিরাটের মুখে বোলারদের প্রশংসা। তিনি বলে গেলেন, ‘বুমরা একটা দিক থেকে দায়িত্ব সামলে গেছে। ওকে সামলানো মুশকিল। টেকনিক ভাল না হলে ব্যাটসম্যানকে বিপদে পড়তে হবে। সামান্য সুযোগ দিলেই ও শেষ করে দেবে। দুর্দান্ত ছন্দে আছে। শুধু বুমরা নয়, রোহিত শর্মার প্রশংশায়ও পঞ্চমুখ বিরাট। রোহিত নিজেও জানাচ্ছেন, “ভালোই লাগছিল, তবে টিপিক্যাল রোহিত শর্মা ইনিংস খেলিনি”।
টানা ৪৭.৩ ওভার আর ২১৩ মিনিট ক্রিজে থাকার পরেও কী অসম্ভব তরতাজা লাগছে তাঁকে। যেন ম্যাচ শুরুই হয়নি। কোথাও ক্লান্তির চিহ্ন নেই। যে কারণে সঞ্জয় মঞ্জরেকরের প্রশ্নে বললেন, ‘ ইংল্যান্ডে এটা আর্লি সামার। আবহাওয়া দারুণ, ভারতের মতো ঘাম হয় না। ভালোই লাগছিল, তবে টিপিক্যাল রোহিত শর্মা ইনিংস খেলিনি। ওভারগুলো খেলে দিতে চেয়েছিলাম, যাতে কাজটা হয়ে যায়।’
রোহিত যে ভাবে বলছেন, সে ভাবে দেখছেন না তাঁর ক্যাপ্টেন বিরাট। প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নেওয়ার পরে টিমের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। বলছেন, ‘টিম প্রত্যেকটা বিভাগে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। এইরকম একটা শুরুই আমরা চেয়েছিলাম। খুব পেশাদার ভঙ্গিতে জয়। মনে রাখতে হবে, গোটা ম্যাচেই উইকেট চ্যালেঞ্জিং ছিল। রোহিতকে টুপি খুলে সেলাম। গোটা ইনিংসে মাথা ঠাণ্ডা রেখেছে, মনে হয়নি কখনও যে ও আউট হতে পারে।’ সঙ্গে যোগ করছেন, ‘এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে করা এই সেঞ্চুরিটা আমার কাছে ওর সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে একেবারে উপরের দিকে থাকবে। স্পেশ্যাল ইনিংস। নতুন বলটা খেলা একেবারে সোজা ছিল না।’
শুধু তাই নয়, রোহিত শর্মার সেঞ্চুরিতে মজে বিরাট বলেছেন, ‘রোহিতকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাকিরা যারা ওর সঙ্গে ব্যাট করেছে। তাদেরও প্রশংসা করব। রোহিত একেবারে শেষ অবধি থেকেছে। স্পেশাল ইনিংস। রাহুলও ভাল ব্যাট করেছে রোহিতের সঙ্গে। এমএস আর রোহিত ম্যাচটা হাতের মুঠোয় নিয়ে এল। ও এরকম ছন্দে থাকলে যে কাউকে দুরমুশ করে দিতে পারে”।
বিরাট জানাচ্ছেন, টস জিতলে তিনি ফিল্ডিং নিতেন। ‘আমরা কোনও ভাবেই টস জিতলে ব্যাটিং নিতাম না। সেটা ঠিকই ছিল। একে মেঘলা আবহাওয়া, তার উপর ওরা দুটো ম্যাচ হেরে ম্যাচটা খেলছে। আমরা তৈরি ছিলাম, নতুন বলে অ্যাটাক করার জন্য। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে-তে। সেখানে কাজটা করে দেয় বুমরা আর ভুবি।’
বুমরা যে ভাবে বল করছেন, তা একটা অবিশ্বাস্য জায়গায় চলে গিয়েছে বলে ধারণা বিরাটের। একেবারেই ভুল ধারণা নয়। বলছেন, ‘অন্য লেভেলে অপারেট করছে বুমরা। একটা বোলার যখন বল করে, স্লিপে দাঁড়ানো ফিল্ডার বল ধরলে বুঝতে পারে, বলটা কত জোরে এসেছিল। আমি কুইন্টনের যে ক্যাচটা ধরেছিলাম, তার পরে ১৫ মিনিট হাতটা জ্বালা করছিল। এতেই বুঝুন, বুমরা কী পর্যায়ে বোলিংটা করছে। অসাধারণ।’ একই সঙ্গে উঠে এল চাহলের নামও। ‘চাহল হল এমন একটা ছেলে যে কখনও ভয় পায় না। রান আকানোর বোলিংয়ে আগ্রহ ওর কোনওদিনই ছিল না। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরে টিমে আসে ও। এই দু’বছরে যে অভিজ্ঞতাটা হয়েছে, সেটা কাজে লাগাচ্ছে ম্যাচে। আমাদের দুই রিস্ট স্পিনারই দুর্দান্ত বোলিং করেছে।’