ট্রেনে ফেরি করার সময় অনেক হকারই বিভিন্ন ধরনের কৌতুক করে থাকেন। এবার এই কৌতুকই দেশজুড়ে মারাত্মক আকার নিতে চলেছে। পশ্চিম রেলের বিভিন্ন ট্রেনে অধেশ দুবে নামের এক হকার খেলনা বেচার সময় কৌতুক করতেন। তাও যাকে তাকে নিয়ে নয়। কৌতুকের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে রাহুল গান্ধী, এমনকী বারাক ওবামাও বাদ যাননি। হকারের এমন রসবোধে ট্রেনযাত্রীরা মজা পেলেও এতে বেজায় চটেছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে রেলমন্ত্রী। এর প্রেক্ষিতেই দুই দপ্তরের কর্তারা আরপিএফ-এর ডিজিকে ডেকে কৈফিয়ত তলব করে। জানতে চায়, ট্রেনে এভাবে হকারি করার স্পর্ধা পেলেন কোথায় হকার অধেশ দুবে। ঘটনাটি ঘটেছে সুরাতে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে হুঁশিয়ারি পেয়ে তটস্থ আরপিএফ-এর ডিজি অরুণ কুমার। সুরক্ষা-সহ ট্রেনে এধরনের হকারি চলতে থাকার দায় যে আরপিএফের ঘাড়ে এসে পড়ল স্পষ্ট বুঝতে পারেন তিনি। এরপর রবিবারই তিনি ভারতীয় রেলের প্রতিটি জোনের আইজিকে লিখিতভাবে হকার উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি প্রমাণ হলে আরপিএফ কর্তাদের বিরুদ্ধে বড়সড় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। ডিজির নির্দেশ পেয়েই পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আরপিএফ হকার উচ্ছেদের জন্য কোমর বেঁধে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে। রাজ্যের স্টেশনগুলি ও ট্রেন থেকে হকার হঠাতে রাজ্য পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আরপিএফ-এর ডিজি।
এই নির্দেশের পর বাংলার স্টেশনগুলি থেকেও হকার উচ্ছেদ হলে প্রায় দশ হাজার পরিবার পথে বসবে। এই আশঙ্কা করে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন বলেন, “হকাররা নিজেরাই এর প্রতিবাদে শামিল হবেন। তবে রেল অবরোধ, ভাঙচুরের বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস।” এমনিতেই হকারদের প্রতি আরপিএফ-এর জুলুমবাজি চিরকাল রয়েছে। এবার তা আরও বলিষ্ঠ হবে। এমনটাই মত তাঁর।
হকারদের অভিযোগ, অধেশ দুবের যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, তাতে মোদীজির প্রশংসাই করেছেন তিনি। বিদ্রুপ করেছেন বিরোধীদের। তাছাড়া নির্বাচনের আগে এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ জেতার পর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নিরপেক্ষতা নেই। লোকসভা নির্বাচনে এই ভিডিও কাজে লাগায় চুপ ছিল প্রশাসন। এখন মিথ্যে অভিযোগের অছিলায় অত্যাচার করছে।