ভোট প্রচারে বেরিয়েই বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’-এর পাল্টা হিসেবে ‘জয় হিন্দ-জয় বাংলা’ স্লোগান তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, “জয় শ্রীরাম বাংলার সংস্কৃতি নয়। আমরা বলব, ‘জয় হিন্দ-জয় বাংলা’।” কিন্তু ২৩ মে ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গেছে, আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে তারা। বিজেপির এই জয় শ্রীরাম ক্যাম্পেনকে রুখে বিপন্ন হতে চলা বাঙালির সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে আগেই বাংলার জয়ধ্বনি তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন মমতা। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের প্রোফাইল পিকচারও বদলে দিলেন তিনি। মনীষীদের ছবির কোলাজকে নতুন প্রোফাইলে পিকচার বানালেন। সেই ছবিতে লেখা আছে ‘জয় হিন্দ’ এবং ‘জয় বাংলা’।
‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ঘিরে চলতি বিতর্কের মধ্যে রবিবার নিজের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল এক ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। আপত্তি এই ধর্মীয় স্লোগানের রাজনীতিকরণে। পোস্টে মমতা লিখেছেন, ‘জয় শ্রীরাম-কে আমরা ধর্মীয় স্লোগান বলেই জানি। কিন্তু সেই ধর্মীয় স্লোগানকে রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি।… প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নিজস্ব স্লোগান রয়েছে। কিন্তু বিজেপি তা ব্যবহার না করে শুধুমাত্র ধর্মীয় স্লোগানকেই ব্যবহার করে রাজনীতিতে ফায়দা লুঠতে চাইছে।’ তার পরই নিজের প্রোফাইল পিকচারের ছবি পরিবর্তন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিক সময়ে বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে নিজের ফেসবুক এবং টুইটারে প্রোফাইল পিকচার বদল করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। গত বছরের নভেম্বরে আসামের তিনসুকিয়া জেলায় ৫ বাঙালিকে ব্রহ্মপুত্রের চরে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে আলফা(আই) সন্ত্রাসবাদীরা। ওই ঘটনার প্রতিবাদে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার কালো করেছিলেন তিনি। আবার লোকসভার শেষ দফা ভোটের প্রাক্কালে কলকাতায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো চলাকালীন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যাসাগরের ছবিকেই ফেসবুক ও টুইটারে নিজের প্রোফাইল পিকচার করেছিলেন মমতা। যা সেসময় নেটিজেনদের ভাবিয়েছিল। আর এবারও মুখ্যমন্ত্রীর দেখাদেখি অনেকেই নিজের নিজের প্রোফাইল পিকচার বদলে মনীষীদের ছবির কোলাজ করা ও ‘জয় হিন্দ’ এবং ‘জয় বাংলা’ লেখা ছবিটি দিয়েছেন।