বিশ্বকাপ যেন রঙের উৎসব – প্রতিবন্ধী রঞ্জনের তুলির ছোঁয়ায় সেজে ওঠেন কোহলি, ধোনিরা
বিশ্বকাপ যেন রঞ্জনের উৎসব। কোনও ক্যানভাসে মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা কোনোটায় বিরাট কোহলি। প্রতিবন্ধী শিল্পী আঁকছেন ইডেনের সামনে বসে। দুটো হাতই অকেজো। তাই একমাত্র ভরসা পা, শিল্প করার জন্য। দু–পায়ে ক্যানভাস সাজিয়ে আঁকা শুরু। প্রচণ্ড গরমেও ভ্রুক্ষেপ নেই। চোখেমুখে জল ছিটিয়ে আবার তুলি–রঙে মন।
শিল্পী রঞ্জন কুর্মির তুলির ছোঁয়ায় ক্যানভাসে রোহিত শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিখর ধাওয়ানদের মুখাবয়ব। কখনও বা একটুকরো লর্ডস। একটি ছবি আঁকতে ঘন্টা দুয়েক। থামার প্রশ্ন নেই। পথচলতি মানুষ থমকে দাঁড়াচ্ছেন রঞ্জনের পায়ের কারসাজি দেখে। কেউ দরদাম করে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের নায়কের ছবি। বিশ্বকাপের মাসে এভাবেই বিকিকিনি চালাচ্ছেন রঞ্জন। কখনও ইডেনের উল্টোদিকের ফুটপাথে। কখনও গ্যালারিতে। কখনও ময়দানের গাছের নিচে। পায়ের আঙুলের খাঁজে তুলি ধরা।
লিকলিকে চেহারা। দু–হাত অস্বাভাবিক ছোটো। হাল্কা কিছু বহন করতেও অসমর্থ। পা জোড়াই সম্বল। তাঁর রোজগারেই চলে মা কল্যাণী কুর্মিকে নিয়ে সংসার। সারা বছর শ’দেড়েক ছাত্রছাত্রী নিয়ে চলে আঁকা শেখানোর পাঠশালা। বেতন খুব কম। দু’অঙ্কও পেরোয় না। কাউকে নিখরচায় শেখান।
এখন তাঁরা বাসস্থান টালির ছাউনির দু’কামরার ঘর। অত্যন্ত অল্প জায়গা। তাই সেখানে স্থান সংকুলান হয় না। ফলে সেখান থেকে মিনিট দশেকের দূরত্বে একটি ভাড়া করা ঘরে চলে তাঁর আঁকা শেখানোর স্কুল ‘তুলিকা আর্ট সেন্টার’। বাড়িতে গিয়ে আঁকা শেখালে টাকা একটু বেশি পাওয়া যায়। সম্প্রতি মুম্বইয়ে এক সংস্থার সঙ্গে ছবি বিকিকিনিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বলেন, “আমার কাছে বিশ্বকাপের মাস হল উৎসবের মাস। ভারতের সব খেলা তো দেখবই। অন্য হাইভোল্টেজ ম্যাচগুলোও দেখব”।