‘চাপিয়ে দেওয়া’ নীতি বারবারই আছে মোদী জামানায়। দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে মোদী সরকার আবার শিক্ষাক্ষেত্রে রদবদলের পথে হাঁটতে চাইছেন। এইবার আরও একবার হিন্দীকে আবশ্যক করতে চাইছে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘নিউ ইন্ডিয়া’র ‘নিউ এডুকেশন পলিসি’ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। মোদীর এই নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি আওয়াজ উঠেছে দক্ষিণ ভারত থেকে। স্কুলে ৩টি ভাষার মধ্যে হিন্দী আবশ্যিক করা নিয়ে এইবার গর্জে উঠলেন ডিএমকে সুপ্রিমো এম কে স্ট্যালিন৷
স্ট্যালিনের হুঁশিয়ারি, তামিলনাড়ুতে যদি হিন্দী ভাষা চাপায় কেন্দ্র, তা হলে যুদ্ধ শুরু হবে৷ কারণ, তামিলদের রক্তে হিন্দির কোনও স্থান নেই৷ এই ইস্যুটি সংসদেও তোলা হবে জানিয়েছেন ডিএমকে৷ শনিবার স্ট্যালিন বলেন, ‘তামিলদের রক্তে হিন্দী নেই৷ তামিলনাড়ুতে হিন্দী চাপানো মানে, ভিমরুলের চাকে ঢিল মারা৷’
স্ট্যানলির আগে কেন্দ্রের শিক্ষানীতির তীব্র সমালোচনা করে ডিএমকে-র রাজ্যসভার সদস্য টি শিবা বলেন, ‘তামিলনাড়ুতে হিন্দী রুখতে আমরা যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে রাজি৷ তামিলনাড়ুতে হিন্দী ভাষা চাপানো মানে সালফারের গোডাউনে আগুন দেওয়া৷ হিন্দী শেখানোর চেষ্টা করা হলে, ছাত্র ও যুবকরা যে কোনও মূল্যে তা রুখবে৷ ১৯৬৫ সাল থেকে হিন্দি-বিরোধী বিক্ষোভই তার স্পষ্ট উদাহরণ৷’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের শিক্ষা নীতি অনুযায়ী, প্রতিটি স্কুলে তিনটি ভাষা আবশ্যিক ভাবে পড়ানো হবে৷ হিন্দি, ইংরেজি ও সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ভাষা৷ শুক্রবারই নয়া শিক্ষা নীতির খসড়া ঘোষণা করেছে কেন্দ্র৷ আর তারপর থেকেই একাধারে সর্বক্ষেত্র থেকে উঠছে বিরোধীতার সুর। বর্তমান শিক্ষানীতি তৈরি হয়েছিল ১৯৯২ সালে। ২০১৪-তে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নয়া শিক্ষানীতি তৈরির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কস্তুরীরঙ্গনকে মাথা করে কমিটিতে ছিলেন ৮ জন বিশেষজ্ঞ। ওই কমিটির জমা করা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
মোদী প্রথম ইনিংসে ‘নোট বাতিল’, ‘জিএসটি’ ইত্যাদি নীতি একপ্রকার চাপিয়েই দিয়েছিল সাধারণ মানুষের ওপর। এইবার আরও একবার হিন্দীকে আবশ্যক করতে চাইছে মোদী সরকার। প্রথম থেকেই যদি এমন চলতে থাকে আগামী পাঁচ বছরে সাধারণ মানুষের জন্য আর কী কী অপেক্ষা করছে সেটাই ভাবাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলকে।