সর্বভারতীয় রাজনীতে গত পাঁচ বছর ধরে স্পষ্ট ধারণা ছিল, আসলে দেশ চালাচ্ছেন মাত্র দু’জন ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সেই কথাটাই আরও স্পষ্ট করে এ বার যেন পাথরে খোদাই করে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার মন্ত্রীরা শপথ গ্রহণ করেন। আর শুক্রবার সকালেই ঘোষণা হল কাকে কোন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাতেই শেষ হল যাবতীয় জল্পনার। অবশেষে অমিত শক্তিধারী হয়ে মন্ত্রীসভায় এলেন অমিত অনিলচন্দ্র শাহ। তিনি পেলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আগের সরকারে এই মন্ত্রক ছিল রাজনাথ সিংয়ের হাতে। রাজনাথ সিং-কে দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব।
প্রথম মোদী সরকারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন নির্মলা সীতারামণ। এবার তাঁকে দেওয়া হল অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব। আগের সরকারে অর্থমন্ত্রী থাকা অরুণ জেটলি এবার আর নেই মোদীর মন্ত্রীসভায়। অসুস্থতার কারণে সরকার থেকে সরে গিয়েছেন তিনি নিজেই। এবার মন্ত্রীসভায় নেই সুষমা স্বরাজও। গত পাঁচ বছর বিদেশমন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এবার সেই দায়িত্ব দেওয়া হল এস জয়শঙ্করকে। একসময় বিদেশ সচিব থাকা জয়শঙ্করকেই স্বাভাবিকভাবেই এই মন্ত্রকের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। দুটি মন্ত্রক থাকছে স্মৃতি ইরানির হাতে। নারী ও শিশুকল্যান এবং বস্ত্র মন্ত্রক দেওয়া হয়েছে স্মৃতি ইরানিকে। এর আগে বস্ত্র মন্ত্রকের দায়িত্ব সালমেছেন তিনি।
আর নারী ও শিশুকল্যান মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন মানেকা গান্ধী। তিনি এবার মন্ত্রীসভায় নেই। অন্যদিকে, আগের মতই সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের দায়িত্ব পাচ্ছেন নীতিন গাডকরি। সঙ্গে পেলেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক। পেশায় চিকিৎসক ড. হর্ষ বর্ধনকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তিনটি মন্ত্রকের দায়িত্ব পাচ্ছেন তিনি। স্বাস্থ্যের সঙ্গে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং আর্থ সায়েন্স। সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রক দেখবেন মোদী সরকারের একমাত্র সংখ্যালঘু মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি। আর ধর্মেন্দ্র প্রধানকে ফের দেওয়া হল পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। আগেই এই মন্ত্রক সামলেছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছে স্টিলও।
এছাড়া রাসায়নিক ও সার মন্ত্রী হচ্ছেন সদানন্দ গৌড়া, ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন রাম বিলাস পাসোয়ান। তিনটি মন্ত্রক পাচ্ছেন নরেন্দ্র সিং তোমর। তাঁর হাতে থাকছে কৃষি ও কৃষক উন্নয়ন, গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েত রাজ। আইনমন্ত্রী হলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। সঙ্গে থাকবে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক এবং যোগাযোগ (মিনিস্ট্রি অফ কমিউনিকেশন)। মোদী সরকারের আর এক মহিলা মন্ত্রী হরসিমরত কাউর বাদলকে দেওয়া হয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রক। রেলমন্ত্রী হচ্ছেন পীযূষ গোয়েল। আগের সরকারের শেষের দিকে তিনিই হয়েছিলেন রেলমন্ত্রী। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের দায়িত্বেও থাকবেন তিনি। দুটি মন্ত্রক পাচ্ছেন প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি পাবেন বন মন্ত্রক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী হচ্ছেন প্রহ্লাদ যোশী। সঙ্গে তিনি হবেন কয়লামন্ত্রী। মহেন্দ্র নাথ পাণ্ডে হবেন স্কিল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী। শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার, ভারী উদ্যোগমন্ত্রী অরবিন্দ সাবন্ত। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বাবুল সুপ্রিয় হলেন বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী। সামাজিক ন্যয়বিচার মন্ত্রী হচ্ছে থাওয়ার চাঁদ গেহলট। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকবেন রমেশ পোখরিয়াল, আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী হচ্ছে অর্জুন মুণ্ডা।