লোকসভা নির্বাচন শুরু হতেই আসরে নেমেছিল বাংলার বিজেপি শিবির। আর তখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা-কর্মীদের নিজের দলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। নির্বাচন শেষ হলেও সেই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রদীপের তলায় যেমন অন্ধকার থাকে, এ ক্ষেত্রেও দল বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিচু তলায় সংশয় তৈরি হয়েছে। হবে না-ই বা কেন, যাঁদের বিরুদ্ধে তারা এতদিন লড়ে এলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলে এলেন, যাঁদের সঙ্গে লড়তে রক্তও ঝরল প্রচুর। তারাই যে এখন বিজেপির ‘বড় কারিয়াকর্তা’।
আপাতদৃষ্টিতে দলের ভাল সময়েও ভাল নেই অনেকে। কারণ একটাই, এবং সহজেই বোধগম্য। একটা ক্ষোভ ছেঁকে ধরেছে বিশেষত বিজেপি নিচু তলার কর্মীদের মনে। রাজ্যে যখন বিজেপি ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ হয়ে বসেছিল, তখন যারা পদ্মপতাকা কাঁধে নিয়ে রোদ্দুরে গ্রামের অলি-গলি চষে বেড়াতেন। তারাই আজ পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। বস্তুত, দুঃখটা পিছনের সারিতে পড়ে থাকার নয়। এক বিজেপি কর্মীর কথায়, ‘যে বেনো জল আমরা সাফ করতে নেমেছিলাম সেই বেনোজলই আমাদের দলে ঢুকছে। মনে হচ্ছে এর বিজেপিটাকেও পচিয়ে দেবে।’ ঠিক এই জায়গাতেই বিরোধিতার সুর শোনা যাচ্ছে সংগঠনের সু-দিনেও।
চাপা একটা ক্ষোভ রয়েছেই বিজেপির অন্দরে। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই ক্ষোভটা মূলত অধুনা বঙ্গ বিজেপির এক শীর্ষ নেতাকে কেন্দ্র করে। সেই মুকুল রায় যাঁকে ঘাসফুল শিবির অনেক সময়ই তাঁকে ‘গদ্দার’ বলে সম্বোধন করে থাকেন। সেই নেতার হাত ধরেই বিজেপিতে ঢুকছেন অন্যদলের কিছু নেতা-কর্মী। আর তাতেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বিজেপির অন্দরে।
বিভিন্ন দলের নেতাদের দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি যে অনেকে মেনে নিতে পারছেন না, তা স্পষ্টত দৃশ্যমান। অনেকেই বলছেন, এই নেতাদের বেশি ভরসা না করতে। নিচু তলার কর্মীদের মনের মধ্যে জ্বলতে থাকা আগুনের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে ধীরে ধীরে। যাঁরা বাংলায় আসার দিবাস্বপ্ন দেখছে তাঁদের মধ্যেই প্রকাশ্যে অসন্তোষের চিত্র। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই চাপা আগুন ছাই চাপা ছিল তা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সেই আগুন দাবানলের মত ছড়িয়ে ছাড়খার করে দিতে পারে গেরুয়া শিবির এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।