মন্ত্রীসভায় বেশ বড় রদবদল ঘটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও একবার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ফিরে পেয়েছেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। দায়িত্ব পেয়েই কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান এই নেতা। প্রথম পদক্ষেপ হিসাবেই তিনি জানালেন মজুরি বৃদ্ধি করতে চান ১০০ দিনের কাজের।
সুব্রত জানালেন, “১০০ দিনের কাজের মজুরি এখন ১৮০ টাকা দেওয়া হয়। এটা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করা যায় কি না, তা নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব।’ বুধবার তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশ দেবেন, সেভাবেই কাজ করব। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরটিও ভাল। এখানেও বহু কাজ করার সুযোগ আছে”।
বুধবার নবান্নে সুব্রতবাবু ও পঞ্চায়েত সচিব এমভি রাওয়ের সঙ্গে গ্রামীণ উন্নয়নের কাজ নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, আনন্দধারা, বাংলার আবাস যোজনা প্রভৃতি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। গত তিনমাস ধরে এই সব প্রকল্পের কাজ রীতিমতো থমকে গিয়েছিল। সেই সব কাজ ফের আগের উদ্যমে শুরু করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আজ, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের পঞ্চায়েত ভবনে দপ্তরে গিয়ে পুনরায় চার্জগ্রহণ করবেন সুব্রতবাবু। এরপরে পঞ্চায়েত দফতরের সব স্তরের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। গত আট বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে গ্রামের চেহারা বদলে গিয়েছে। রাস্তাঘাট থেকে গোটা এলাকায় নানা ধরনের উন্নয়ন হয়েছে।
অন্যদিকে সৌমেন মহাপাত্রকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পরিবেশ দফতর দেওয়া হয়েছে। বুধবার সৌমেন পিংলায় মিছিল করেছেন। লোকসভা নির্বাচনে পিংলা বিধানসভা থেকে দলের প্রার্থী জিতেছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি কলকাতায় আসছেন। পরিবেশ দফতরে যাবেন। অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ কন্ট্রোল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করব। কলকাতায় দূষণ ক্রমশ বাড়ছে। কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে পরিবেশ কন্ট্রোল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করব।’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের সঙ্গে আদিবাসী উন্নয়ন দফতরটিও দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু করেননি রাজীব। বললেন, ‘দায়িত্ব যখন পেয়েছি, তখন তো কাজ শুরু করতে হবে।’
বেড়েছে শুভেন্দু অধিকারীর দায়িত্বও। পরিবহণের সঙ্গে তিনি দেখবেন সেচ ও জলসম্পদ দফতর। শুভেন্দু বললেন, ‘নতুন দফতরে এখনও যাইনি। মা–মাটি–মানুষের সরকার একটা নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে কাজ করে। আমিও তাই করব।’ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বর্ষা আসছে, সেচ দফতরে অনেক কাজ করতে হয়। শুভেন্দু বলেন, ‘সবটাই মাথায় আছে। অফিসারদের সঙ্গে আগে কথা বলব। তারপর সব জানাতে পারব।’
এবার থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে ব্রাত্য বসুকে সামলাতে হবে বন দফতরও। এই দফতরটি দেখতেন বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। তিনি এখন দফতরহীন মন্ত্রী। ব্রাত্য এদিনই সল্টলেকে অরণ্য ভবনে যান। অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেন। ফুল দিয়ে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘এটা খুব ভাল দফতর। এই দরতরটি পেয়ে আমি খুব খুশি। প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে।’ এদিন অরণ্য ভবনে যাওয়ার আগে ব্রাত্য গিয়েছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরে। ব্রাত্যর বক্তব্য, ‘আগে দফতরের কাজ বুঝে নিই। তারপর যা বলার বলব। এটুকু বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে কাজ করতে বলবেন, সেভাবেই কাজ হবে।’