লোকসভা ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিজেপির গুন্ডাবাহিনীর দাপাদাপি। আর ভোটের ফল বের হওয়ার পর তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাংলা থেকে ১৮ আসন পাওয়ায় এখন আরও বেশি আগ্রাসী গেরুয়া শিবির। তাই প্রায় রোজই চলছে জোর জবরদস্তি তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল। চলছে তৃণমূল কর্মীদের মারধর, ঘর ভাঙচুরও। এমন অত্যাচারে ঘরছাড়া বহু কর্মীই। এ হেন পরিস্থিতিতে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে এবার আসরে নামতে চলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নৈহাটি যাবেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, আগামীকাল নৈহাটি পুরসভার সামনে রয়েছে তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি৷ ঘর ছাড়াদের ঘরে ফেরানো দাবিতে দুপুরে হবে অবস্থান বিক্ষোভ৷ জানা গেছে, তাতেই যোগ দেবেন মমতা৷
প্রসঙ্গত, ভোটের পর ও ফল পরবর্তী সময় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল৷ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নৈহাটিও৷ তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর, বাইকে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে৷ গোটা বিধানসভায় প্রায় ৪০০ তৃণমূল কর্মী ঘর ছাড়া বলে দাবি বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের৷ অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডাদের তাণ্ডবেই এই পরিস্থিতি৷ টিটাগড়, কাঁকিনাড়াতেও ঘটে একই ঘটনা৷ শাসক দলের বহু কর্মী, সমর্থক ঘর ছাড়া হয়ে পড়েন৷ প্রাণের ভয় অন্যত্র গিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের৷ তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই অঞ্চলের ৫০০টি পরিবার ঘরছাড়া। এ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে।
সেই ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতেই কাল নৈহাটিতে অবস্থান কর্মসূচী তৃণমূলের। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই এলাকায় ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যাপারে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত হোন, এমনটাই চাইছেন স্থানীয় নেতারা। তাই তাঁরা চাইছেন দলনেত্রী যেন ওই এলাকায় ঘিরে ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড়ান। তৃণমূল কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে সকলকে সকলকে সাহস জোগান। জানা গেছে, সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই আগামীকাল নৈহাটি যাচ্ছেন মমতা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনায় একটি ড্যামেজ কন্ট্রোল কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিকে এই বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচীর পরিকল্পনা রূপায়ণে এই মুহূর্তে সেই কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।