সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে ফের ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। ফলাফল প্রকাশের দিনেই ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। নতুন কাউকে সভাপতি করার অবস্থানে সোমবারও দীর্ঘক্ষণ অবধি অনড় ছিলেন রাহুল। রাহুলের জেদ দেখে রাজ্যে রাজ্যে নেতাদের পদ থেকে ইস্তফা পেশের হিড়িক পড়ে। ‘কামরাজ প্ল্যান’-এর দিন ফিরে এল কি না, গুঞ্জন শুরু হয় দলের অন্দরেই। তবে রাতের দিকে বরফ কিছুটা হলেও গলেছে বলে সূত্রের দাবি।
তবে রাহুলের কড়া অবস্থানে দলের অন্য নেতাদের উপরে চাপ বাড়ছে। রাহুল এত দিন রাজ্যে-রাজ্যে বড় নেতাদের উপর ভরসা রেখে এগিয়েছেন। তাঁদের দাবি মেনে নিয়েছেন। সনিয়াও প্রবীণদের রাখতে চেয়েছিলেন। অথচ তাঁদের ব্যর্থতার কারণেই কংগ্রেসের আজ এই হাল। ওয়ার্কিং কমিটি রাহুলকেই দলের খোলনলচে বদলানোর দায়িত্ব দিয়েছে। সেটা তখনই সম্ভব হবে, যখন তাবড় নেতারা পদ ছেড়ে দেবেন। তখনই মাটির সঙ্গে যোগ থাকা নেতাদের সামনে এনে দল ঢেলে সাজানো যাবে।
রাহুলকে বোঝাতে আজ সকালে আহমেদ পটেল ও কে সি বেণুগোপাল তাঁর কাছে যান। কিন্তু রাহুল তাঁদের ফের জানিয়ে দেন, ইস্তফার অবস্থান থেকে তিনি সরছেন না। নতুন কাউকে সভাপতি খুঁজে নিক দল। যদিও আহমেদ পটেল পরে টুইট করে জানান, ‘‘রুটিন প্রশাসনিক কাজের জন্য আমি কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। অন্য কোনও জল্পনা ভিত্তিহীন।’’ কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘ওয়ার্কিং কমিটি রাহুল গাঁধীকেই সংগঠনের আমূল পরিবর্তনের দায়িত্ব দিয়েছে।’’ অর্থাৎ, রাহুল গাঁধীই সভাপতি থাকছেন।
কিন্তু কংগ্রেসের সূত্রই বলছে, রাহুল এতই ক্ষুব্ধ যে তিনি সব বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন। আহমেদ পটেল ও বেণুগোপাল ছাড়া কারও সঙ্গে দেখা করেননি। অশোক গহলৌত দেখা করতে চাইলেও তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। পরে আহমেদ পটেল প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে কথা বলেন। রাহুলের সঙ্গেও কথা হয় প্রিয়ঙ্কার। রাতের দিকে দলীয় সূত্রে জানা যায়, রাহুল সম্ভবত কিছু শর্ত দিতে চলেছেন। দলের সভাপতির দায়িত্ব সামলাতে হলে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ এবং দলীয় কার্যশৈলী বদল করার ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকতে হবে। এই শর্ত মানলে তিনি হয়তো কাজ চালিয়ে যাবেন। আহমেদ পটেল রাতে বলেন, ‘‘নো চেঞ্জ, অল ইজ ওয়েল।’