নারী দিবসের পদযাত্রার দিনেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘ভোট এলেই কিছু লোক ৩৩ শতাংশ মহিলাদের সংরক্ষণের দাবি তোলে। কিন্তু আমরা এ সব অনেক দিন আগেই করে দিয়েছি। আমাদের ৩৫ শতাংশ নির্বাচিত সদস্য মহিলা। এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়াব।’ প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিনই তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ৪২টি আসনে ১৭ জন মহিলাকে প্রার্থী করে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। প্রায় ৪১ শতাংশ মহিলা প্রার্থী দেওয়া যথেষ্ট সাহসী পদক্ষেপ বলেই মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল।
তবে গতকাল লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই প্রমাণ হয়ে গেল, নিজের ‘বোন ব্রিগেডের’ ওপরে ভরসা রেখে কোনও ভুল করেননি মমতা। ১৭টি আসনের সবকটিতে না হলেও বেশিরভাগ আসনেই জয়ী হয়েছেন দিদির বোনেরা। প্রসঙ্গত, ২৩ মে নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন বেলা বাড়তেই বোঝা গিয়েছিল বেশ কয়েকটি আসনে জয়ী হতে চলেছেন তৃণমূলের প্রমীলা বাহিনী। ভোটে জয়ী হয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়। জোরদার লড়াই করেছেন টলি পাড়ার দুই অভিনেত্রীও। বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান। সমান তালে টক্কর দিয়েছেন যাদবপুরের প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী।
এছাড়াও জয়ীর তালিকায় তালিকায় রয়েছেন, মহুয়া মৈত্র (কৃষ্ণনগর), শাজদা আহমেদ (উলুবেড়িয়া), অপরূপা পোদ্দার (আরামবাগ), কাকলি ঘোষ দস্তিদার (বারাসত), শতাব্দী রায় (বীরভূম), প্রতিমা মণ্ডলও (জয়নগর)। উল্লেখ্য, চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনে বেশ কিছু বদল এনেছিলেন দলনেত্রী। ১৮টি কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করে নিয়ে এসেছিলেন একঝাঁক নতুন মুখ। তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য দুই টলিউড অভিনেত্রী মিমি এবং নুসরত। সিনেমার তারকাদের প্রার্থী করায় সে সময় জলঘোলা হয়েছিল অনেক। তবে ভরসা রেখেছিলেন দিদি। আর সেই ভরসারই যথাযোগ্য সম্মান দিয়েছেন এই দুই টলি তারকা। আবার কৃষ্ণনগরেও মহুয়া মৈত্রকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা। জয়ী হয়েছেন তিনিও। ফলে গতকালে তৃণমূলের প্রমীলা বাহিনীর এই জয় যেন আসলে নারীশক্তির জয়গানই।