আগামি ১৯ তারিখ শেষ দফার নির্বাচন। এই শেষ দফায় ভোট হবে কলকাতায়। আজই প্রচারের শেষদিন। প্রথম দিন থেকে যেভাবে প্রচারে ঝড় তুললেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়, তাতে তিনি নিশ্চিত তাঁর জয় আসছে। শুধু মালা নয়, এলাকার বাসিন্দারাও তাঁকে এই আশ্বাস দিচ্ছেন, “ দিদি আপনি জিতছেন”।
হুডখোলা জিপে সাতসকালে বেরিয়েছেন কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়। প্রখর রোদে তেতে উঠেছে চারপাশ। একটা ছোট্ট মেয়ে হাতে ফুল নিয়ে ছুটে এসে বলল, আন্টি এটা তোমার জন্য। শুনেই তার গাল টিপে স্নেহের ছোঁয়া দিলেন প্রার্থী। দ লের অন্যতম ‘গড়’ বলে পরিচিত এই কেন্দ্রে কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সনের উপর আস্থা রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে চান মালাদেবীও। সকাল থেকে দুপুর, বিকেল থেকে রাত—শুধুই ছুটে গেছেন তিনি। মাঝে এক ঘণ্টা বিশ্রাম। কখনও পশ্চিম কলকাতার গার্ডেনরিচ, কখনও আবার দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ। আবার চলে যেতেন দক্ষিণ শহরতলির প্রত্যন্ত এলাকা জোকাতেও। বললেন, নিজেকে চেনানোর প্রয়োজন হচ্ছে না মানুষের কাছে। বাড়ির প্রতিটি মানুষ আমাকে চেনেন। এটাই আমার ভরসা। সবশেষে রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর আশীর্বাদ। যেকারণে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী।
প্রথম থেকেই প্রচারে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছিলেন তিনি। যেখানেই সভা কিংবা রোড শো করতে যাচ্ছিলেন ভিড় উপচে পড়ছিল তাঁকে দেখতে। কেউ তাঁকে একবার চোখের সামনে দেখতে চাইতেন কেউ বা চাইতেন সেলফি তুলতেন, কেউ এগিয়ে দিতেন জলের বোতল, কেউ গলায় মালা পড়িয়ে দিতেন। আর মালাও কাউকে নিরাশ করতেন না।সকলের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন জানতে চাইলেন সকলের সমস্যার কথা। কিছুদিন আগেই এক বৃদ্ধা তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন, “ মমতার মত তুইও আমাদের মেয়ে। জিতে আয় মা”। আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলেন মালা। উচ্ছ্বসিত মানুষ তাঁকে বলেছেন, “ দিদি, অভিষেকেই সেঞ্চুরি চাই। গতবার মার্জিন ছিল, ১ লক্ষ ৩৬ হাজার। এবার অন্তত আড়াই চাইই-চাই”। হেসে উঠলেন দিদি। বললেন, তোমরা পাশে থাকলে সেই মার্জিনেই আমি জিতব। কারণ, তোমরাই আমার শক্তি।
মালা জানাচ্ছেন, “আমি তো শুধু লোকসভার প্রার্থী নই, কাউন্সিলারও। তাই নিজের ওয়ার্ডের দিকেও আমাকে প্রতিদিন নজর রাখতে হয়। এই ওয়ার্ড আমার সন্তানের মতো। এখানকার মানুষ আমাকে বাড়ির মেয়ের মতোই ভালোবাসে। আর সেই ভালোবাসাই আমি প্রচারে বেরিয়ে কলকাতা দক্ষিণের প্রতিটি প্রান্তে পেয়েছি। যেটা আমার কাছে প্রধান শক্তি”।
প্রতাপাদিত্য রোডে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কার্যালয়ের সব দায়িত্ব সামলানো মালাদেবীর অন্যতম অনুগত গৌতম দত্তের কথায়, পরিসংখ্যানই দেখুন না, ১৯৯১ সালের পর থেকে এই কেন্দ্রে কখনওই হারেননি মমতা এবং তাঁর দলের প্রার্থীরা। আগে এই কেন্দ্র থেকে জিততেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি এখান থেকে সাংসদ হয়েছেন। এবার মানুষের ‘ঘরের মেয়ে’ জিতবেন। আমরা এনিয়ে পুরোপুরি আশাবাদী। তাই দিদি জিতলে আমরা কীভাবে উৎসব করব, সেটাও চূড়ান্ত করে ফেলেছি।