ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা লালরিনডিকা। মাঠে নামলে যে ভীষণ ভয়ঙ্কর। তবে ফুটবলার না হলে হয়তো ভলিবল খেলোয়াড়ই হতেন ডিকা। মিজ়োরামের লুংলাই শহরে জন্ম ডিকার। শৈশবে ফুটবলের চেয়ে ভলিবলই বেশি প্রিয় ছিল তাঁর। ভেংলাই সরকারি হাইস্কুলের ভলিবল দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। সেরা অস্ত্র ছিল শক্তিশালী স্ম্যাশ। আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন স্কুলকে। কিন্তু ১২ বছর বয়সে হঠাৎ-ই ভলিবলকে বিদায় জানিয়ে ফুটবল বেছে নেন ডিকা। যোগ দেন কলকাতায় আইএফএ অ্যাকাডেমিতে।
লাল-হলুদ তারকার ব্যাখ্যা, ‘‘মিজ়োরামে ফুটবল সব চেয়ে জনপ্রিয়। সারা বছর ধরে প্রচুর প্রতিযোগিতা হয়। ভলিবলের প্রতিযোগিতা বছরে মাত্র দু’টো। তাই কিছুটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফুটবলার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।’’ ডিকা আরও বললেন, ‘‘মিজ়োরাম থেকে ট্রায়াল দিতে কলকাতায় এগারো জন গিয়েছিলাম। সুযোগ পাই চার জন। শুরু হল ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নতুন লড়াই।’’
ডিকা শোনালেন তাঁর ফুটবলার হওয়ার কাহিনি। বললেন, ‘‘স্কুলের হয়ে ভলিবল ও ফুটবল দু’টোই খেলতাম। তবে ভলিবল বেশি ভাল খেলতাম বলে স্কুল দলের অধিনায়ক ছিলাম। খুব সম্ভবত ২০০৩ সাল। আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় ভলিবলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তার পরে ফুটবলে খেতাব জয়ের লক্ষ্যে আইজ়লে খেলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফাইনালে হেরে যাই।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘সেই সময় প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার বাছতে আইজ়ল এসেছিলেন আইএফএ অ্যাকাডেমির এক নির্বাচক। ম্যাচ হেরে যখন মন খারাপ করে বসে আছি, তখন তিনি আমাকে কলকাতায় আইএফএ অ্যাকাডেমিতে ট্রায়াল দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন। বুঝতে পারছিলাম না কী করব। কারণ, কলকাতায় যাওয়া মানে ভলিবল ছাড়তে হবে। সারা রাত ভাবলাম। শেষ পর্যন্ত ফুটবলকেই বেছে নিলাম।’
ভলিবলকে অবশ্য পুরোপুরি বিদায় জানাননি ডিকা। ছুটিতে বাড়ি ফিরলেই বন্ধুদের সঙ্গে নেমে পড়তেন কোর্টে। সেই সময় কোনও প্রতিযোগিতা থাকলে খেলতেন। এখনও ছবিটা বদলায়নি। মরশুম শেষ হওয়ার পরে মিজ়োরাম ফিরেই নেমে পড়েছেন ভলিবল প্রতিযোগিতায়। দলকে চ্যাম্পিয়নও করেছেন। হাসতে হাসতে ডিকা বলছিলেন, ‘‘এক দিনও অনুশীলন করার সময় পাইনি। সরাসরি কোর্টে নেমে পড়ি।’’ সমস্যা হয়নি? ‘‘না, ভলিবলে দক্ষতা আমার জন্মগত। আমি খেলি স্পাইকার পোজিশনে। আমার কাজ, নেটের সামনে লাফিয়ে উঠে স্ম্যাশ করা। এর জন্য দুর্দান্ত ফিটনেস দরকার। তাই আমার কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’’