কলকাতায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো থেকেই অশান্তির শুরু। তারপর বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বিজেপিকে তোপ দেগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “বাইরে থেকে লোক এনে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে বিজেপি। কারণ, বাঙালি কোনোদিন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে পারে না”। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি বীরসিংহ। ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামের মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। বুধবার বিকেলে ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ডে প্রতিবাদ–সভা হয়। কুশপাতা বাস স্টপ থেকে সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত একটি অরাজনৈতিক প্রতিবাদ–মিছিলের আয়োজন করে ঘাটাল যুক্তিবাদী সংগঠন।
ঘাটালের বুদ্ধিজীবী মহল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। বিদ্যাসাগর স্মৃতিরক্ষা সমিতির ঘাটাল শাখার সম্পাদক তাপস পোড়েল–সহ সভাপতি গৌরীশঙ্কর বাগ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার তীব্র নিন্দা করে জানান, “সংস্কৃতি কতটা নীচে নেমেছে, ভাবা যায় না”। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক প্রশান্ত সামন্ত বলেন, “ফ্যাসিস্ট কাজের মতো এই ঘটনার নিন্দা করার মতো ভাষা পাচ্ছি না। যারা এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করা উচিত”। বিদ্যাসাগর স্কুলের শিক্ষক শিক্ষক দুলাল কর জানান, “এই ঘটনা লজ্জাজনক। মনীষীর মূর্তি–ভাঙা সংস্কৃতিকে মেনে নেওয়া যায় না। যেই করুক, তীব্র প্রতিবাদ প্রয়োজন”।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙায় অপমানিত বীরসিংহের প্রতিটি পরিবার। বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী পালনের তোড়জোড় চলছে রাজ্য জুড়ে। ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এখানেই জন্ম বিদ্যাসাগরের। দীর্ঘ দিন এখানকার মানুষ বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে ও সংগ্রহশালা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রতিদিনই এখানে আসেন। তাঁর ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, জুতো, ছাতা, বই— সব সাজানো রয়েছে। বীরসিংহ গ্রামের বাসিন্দা এবং ঘাটাল কলেজের অধ্যাপক প্রসাদ ঘোষ জানান, “এই ঘটনার নিন্দা করার ভাষা নেই। ন্যক্কারজনক। কোলাঘাট কোলে ইউনিয়ন হাই স্কুলের শিক্ষিকা এবং গ্রামের বাসিন্দা নবনীতা ঘোষ জানান, ‘যারা মূর্তি ভেঙেছে তারা একটু হলেও পড়াশোনা জানে। তারা কি অন্ধ?” বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার এই ঘটনা মানতে বাঙালির সমস্যা হচ্ছে। এই ঘটনা বাংলার মানুষ মেনে নিতে পারছে না।