‘আমাদের গেছে যে দিন, একেবারেই কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকি?’ দিবারাত্রি এখন এমনই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। তবে উত্তরটা খুবই স্পষ্ট সকলের কাছে। নেই, বিজেপির ‘আচ্ছে দিন’ সত্যিই গেছে। কারণ বিজেপি’র হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের সভায় ভিড় হচ্ছে না। এবার যেমন দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একপ্রকার ফাঁকা মাঠেই নির্বাচনী জনসভা করে গেলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মৃণালকান্তি দেবনাথের সমর্থনে জেলা বিজেপির উদ্যোগে বুধবার দুপুরে হাবড়ার শুভ জাগ্রত সঙ্ঘের ময়দানে এই সভার আয়োজন করা হয়। যোগী তাঁর বক্তব্যে কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার কথা অস্বীকার করেন। পাশাপাশি মোদীর গুণগান করে তৃণমূলকে একপ্রকার হুমকি দিয়ে যান। কিন্তু সেসবই ফাঁকা চেয়ারের সারির সামনেই। তবে এই প্রথম নয়, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে হওয়া প্রচার সভাতেও মাঠ ভরাতে পারেননি তিনি।
শুধু তাই নয়, সেই সভায় দলের প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর নিজেই উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি যোগী তাঁর বক্তব্যে একবারের জন্য প্রার্থীর নাম পর্যন্ত মুখে আনেননি। এই নিয়ে দলীয় কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি করে ছিলেন, যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্য শুনতে গোটা মাঠ ভরে গিয়েছিল। আর প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর অসুস্থ থাকার কারণে ওইদিনের সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।
তবে হাবড়ার সভায় অবশ্য অনেক বেশি সতর্ক ছিল বিজেপি। যোগীর ভাষণ শুরু হওয়ার আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বারাসতের প্রার্থী মৃণালকান্তি দেবনাথ। এদিন যে মাঠে যোগীর সভা আয়োজন করা হয়েছিল, সেই মাঠটি তুলনায় অনেকটাই ছোট। তার ওপর নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে মাঠের অনেকটা অংশ ঘিরে ছোট করা হয়েছিল। তার পাশাপাশি মাঠের মাঝখানে কিছুটা অংশ জুড়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল। আর সেই অংশটুকুই শুধুমাত্র ভর্তি ছিল। বাকি গোটা মাঠই ছিল ফাঁকা।
উল্লেখ্য, এর আগে বনগাঁ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের আগে কল্যাণীতে বিজেপির হয়ে প্রচার সভা করতে এসে মুখ পুড়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। কারণ লোক হয়েছিল হাতে গোনা। তারপর ঘাটালে ভারতী ঘোষের সমর্থনে করতে এসেও সেই ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ দিতে হয়েছিল শাহকে। সেই একই ছবি দেখা গেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও! পুরুলিয়ায় ফাঁকা চেয়ারের সারির সামনেই ভাষণবাজির এক্সপ্রেস ছোটাতে হয়েছে তাঁকে। এর থেকেই এ কথা স্পষ্ট যে, বিজেপির দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে বাংলার মানুষ।