খবরে সত্যতা নাই থাকুক, প্রতিটা ভুয়ো খবরকেও আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেব এবং মানুষ সেটাকেই সত্যি বলে গ্রহণ করবে। গতবছর রাজস্থানের কোটা-য় দলের সোশ্যাল মিডিয়ার ভল্যান্টিয়াদের উদ্দেশ্যে এমন কথাই বলতে শোনা গেছিল অমিত শাহকে। সেই মতোই কাজ করছে তারা, এবার মিলল তার প্রমাণ। এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এই তথ্য উঠে এল যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরের জঞ্জাল ছড়ানোর ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৩টি ফেসবুক পেজ এবং ২০০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ২৭ হাজার পোস্ট খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা। খবরের জঞ্জাল বা জাঙ্ক বলতে কী বোঝাচ্ছেন ওঁরা? শুধু ভুয়ো খবর নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অর্ধসত্য এবং ভুল তথ্যও এর মধ্যে পড়ছে। পড়ছে চক্রাম্তমূলক, উত্তেজক, চরমপন্থী বার্তা। গবেষণায় দেখা গেছে, হোয়াটসঅ্যাপে বিজেপির পোস্টগুলির মধ্যে ৩৫ শতাংশ বিভেদমূলক এবং চক্রান্তমূলক বার্তা, ১৮ শতাংশ প্রচার এবং সমর্থন চাওয়ার বার্তা, ১০.৫ শতাংশ জাতীয়তাবাদ এবং সেনার নামে বার্তা, ৩.৫ শতাংশ ধর্মীয় এবং ৩.৫ ব্যঙ্গধর্মী।
ফেসবুকে লিঙ্ক শেয়ার করার ব্যাপারে দেখা গিয়েছে, বিজেপি ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পেশাদার সংবাদমাধ্যম থেকে, ২৮ শতাংশ অসমর্থিত ভুয়ো সূত্র থেকে। এবং শেয়ার করা ছবির ক্ষেত্রে বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশই প্রচার এবং সমর্থন চাওয়ার। ১২ শতাংশেরও বেশি ছবি ভুয়ো। ভোটের বাজারে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রিপোর্টে যে মুখ পুড়েছে গেরুয়া শিবিরের, তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, এর আগে বিবিসি প্রকাশিত এক রিপোর্ট জানিয়েছিল, ভুয়ো খবর ছড়িয়ে প্রতিপক্ষকে খতম করা, ভিন্ন মতকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার এই পন্থাকেই হাতিয়ার করে বিজেপি। ভারতের সাম্প্রতিক হিংসাও সেই ধারারই অংশ।