তীব্র গরমে নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। জরুরি প্রয়োজন ছা়ডা কেউ দুপুরে ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না। তিনি তখন রাস্তায় হনহন করে হেঁটে চলেছেন। আর তাঁকে দেখতে রাস্তার দু’পাশে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা হাজার হাজার মানুষের। বোঝাই যাচ্ছে এই তিনি আর কেউ নন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাই একবার দেখতে চান দিদিকে।
একদিন দু’দিন নয়। ভোট মরশুমে প্রায় ২ মাস ধরে দিনে দুটো-তিনটে করে প্রচার সভা করছেন মমতা। সভা শেষে করছেন রোড শো। প্রতি সভা এবং রোড শোতেই একই চিত্র। পুলিশের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে কেউ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নেত্রীর পায়ে। কখনও প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁকে বরণ করছেন এলাকার মহিলারা। তীব্র দাবদাহকে হেলায় উপেক্ষা করে তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দু’ধারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন বহু মানুষ। তাঁর পদযাত্রা যখন যে পথ দিয়ে গিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন পদযাত্রায় ঢুকে পড়েছেন।
‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ ধ্বনিতে উত্তাল হয়ে উঠছে এলাকা। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পতাকা নাড়িয়ে, স্লোগান দিয়ে মমতাকে বরণ করে নিচ্ছেন আমজনতা।
কখনও মেদিনীপুর, কখনও বারাসত আবার কখনও বা পুরুলিয়া। মমতার জনসভা ঘিরে সর্বত্র একই চিত্র। মমতা হাঁটছেন প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। সঙ্গে থাকা সাংবাদিকরা ক্লান্ত হয়ে সরে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু মমতা ক্লান্তিহীন। হাসিমুখে কখনও হাতজোড় করে আবার কখনও হাত নাড়িয়ে এই গরমেও হাঁটছেন টানা।
সবথেকে যেটা বেশি নজর কেড়েছে সেটা হল, মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রাকে ঘিরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের উন্মাদনা। কেউ উলুধ্বনি দিয়ে, কেউ আবার শাঁখ বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। অনেকেই আবার ব্যারিকেড করে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়ানো পুলিশকে এড়িয়ে সটান পৌঁছে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। কোনও পদযাত্রা চলাকালীন ভিড় টপকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে চলে আসছেন অতি উৎসাহী কেউ কেউ। হাত মেলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁদের কোনও মতে সরিয়ে নিয়ে যাছেন পুলিশকর্মীরা। আবার কোথাও মহিলারা বরণডালা হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছেন। তা দেখে নিজেই তাঁদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মমতা। মহিলারা প্রদীপ জ্বালিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বরণ করছেন। আর মমতা সর্বদা হাসিমুখে। হ্যাঁ, তিনি তো আমাদের ঘরের মেয়ে। তিনি জননেত্রী বাংলার আগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।