‘আমাদের গেছে যে দিন, একেবারেই কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকি?’ দিবারাত্রি এখন এমনই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। তবে উত্তরটা খুবই স্পষ্ট সকলের কাছে। নেই, বিজেপির ‘আচ্ছে দিন’ সত্যিই গেছে। কারণ বিজেপি’র হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের সভায় ভিড় হচ্ছে না। কখনও দেখা যাচ্ছে অনুপম খের তাঁর স্ত্রী কিরণ খেরের নির্বাচনী সভায় উপস্থিত থাকলেও ভিড় হল না। কখনও দেখা যাচ্ছে যোগী আদিত্যনাথের সভায় মাঠ ফাঁকা। আবার দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভায় কেউ গেলই না। যার ফলে চিন্তার ভাঁজ পড়ছিল কপালে। এবার যা হল তা আরও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ালো বিজেপি নেতৃত্বের কাছে।
বৃহস্পতিবার দিল্লির শাস্ত্রী নগরে সভা ছিল বিজেপি’র শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের। আশা করা হয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হবে। কিন্তু যা হল তা হচ্ছে ফাঁকা ময়দানে মাছি মারা। একে তো লোক সমাগম হলই না। উলটে যে ক’জন এলেন তাঁরা হাই তুলে ঘুমিয়ে পড়লেন। আবার কেউ কেউ পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেলেন। একবারের জন্য তাকালেনও না। বসলেনও না। এমনকী ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীরকে নিয়ে আসা হয়েছিল সভা ভরানোর জন্য। তাও গেল জলে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর মানুষ কি মুখ ফিরিয়ে নিল? নাকি সবাই আপকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? সেটা অবশ্য ২৩ মে জানা যাবে। তার আগে এই সভাগুলিতে প্রদীপের তলার অন্ধকারকেই বড় করে দেখাচ্ছে।
তবে শুধু রাজধানীতেই নয়। একই ছবি দেখা যাচ্ছে বাংলাতেও। বনগাঁ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের আগে কল্যাণীতে বিজেপির হয়ে প্রচার সভা করতে এসে মুখ পুড়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। কারণ লোক হয়েছিল হাতে গোনা। তারপর ঘাটালে ভারতী ঘোষের সমর্থনে করতে এসেও সেই ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ দিতে হয়েছিল শাহকে। সেই একই ছবি দেখা গেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও! পুরুলিয়ায় ফাঁকা চেয়ারের সারির সামনেই ভাষণবাজির এক্সপ্রেস ছোটাতে হয়েছে তাঁকে। প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপির হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের এমনই একের পর এক ফাঁকা সভা যে গেরুয়া শিবিরের আঁতে সজোরে ঘা মারছে, তা বলাই বাহুল্য।