ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রের হাল-হকিকত বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আমলেই লগ্নীর জোয়ার এসেছে বাংলায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার শিল্পতালুক রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় সভা করতে এসেও রাজ্যের শিল্প নিয়ে ফের জোরালো বার্তা দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, যত শিল্প হবে, তত চাকরি হবে। রাজ্যের উন্নয়ন হবে। তাই কোনও মতে শিল্পপতিদের ‘বিরক্ত’ করা চলবে না। সাঁতুড়ির ঢেঁকশিলা স্কুলের মাঠে তৃণমূলের সভা ছিল। সেখানেই তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘নতুন শিল্প হলে এখানকার ছেলেমেয়েদের বাইরে দৌড়তে হবে না। বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা যা চাকরি পাবে, তাতেই তারা ভেসে যাবে। কেউ কোনও ভাবে কাউকে ডিস্টার্ব করবেন না।’ সেইসঙ্গে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘বিরক্ত করলে, জানতে পারব। আর সে দিন কিন্তু আমার থেকে বড় শত্রু আর কেউ হবে না।’
গতকাল দলনেত্রীর দেওয়া এই বার্তা তৃণমূলের একাংশকে মনে করিয়ে দিচ্ছে গত বছর পুরুলিয়ার বেলগুমা পুলিশ লাইনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার কথা। সেখানেও তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কানে রঘুনাথপুর এলাকায় সরকারি কাজে টাকা চাওয়ার অভিযোগ এসেছে। তখন তিনি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি দেখতে বলেছিলেন। রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী রঘুনাথপুরকে শিল্পায়নের মোড়কে ঢেলে সাজাতে চাইছেন। রঘুনাথপুরে বিনিয়োগের আর্দশ পরিবেশ তৈরির জন্য তিনি সর্বদাই সচেষ্ট। তাই আগাম সর্তক করেছেন।’ পরে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পপতিরা যেন বলেন, এখানে কোনও জুলুম নেই। যত শিল্প হবে তত চাকরি হবে।’
রঘুনাথপুর মহকুমার অন্যতম শিল্পাঞ্চল সাঁতুড়ি। গতকাল তাই সাঁতুড়িতে মমতার বক্তব্যের অনেকটাই জুড়ে ছিল রঘুনাথপুরে শিল্পের উন্নতিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা। তিনি বলেন, ‘রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের একটা বড় কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, সেটা অনেকেই জানেন না।’ এরপরই তিনি জানান, রঘুনাথপুর ছুঁয়ে যাবে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর’। ২,৬০০ একর জমির ওপরে কারখানা হবে। দাবি করেন, ইতিমধ্যেই তিন হাজার একর জমির উপরে চারটি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ পার্ক’ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের বিবরণ দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘এলাকায় প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এলাকার অর্থনীতিটাই পুরোপুরি বদলে যাবে।’