ক্ষমতায় এসে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নকে পাখির চোখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার আমলেই চিকিৎসা ব্যবস্থার তুমুল উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ পেয়েছে বিনামূল্যের ওষুধ, হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পরিবর্তে অনলাইনে টিকিটের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসাথীর মত প্রকল্প ইত্যাদি সব কিছুই করেছেন মমতা। এবার বাংলার মানুষকে আরও এক উপহার দিলেন তিনি। এবার বাড়ির কাছের সরকারি হাসপাতালেই মিলবে ওষুধ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে স্বাস্থ্যভবন এবং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরগুলির মধ্যে সমন্বয় রাখতে এবং যে কোনও বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চালু হয়েছিল ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’। ৩০টি হাসপাতালে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের পর কোন কোন বিষয়ে খামতি আছে এবং কোথায় জোর দেওয়া দরকার, তা নিয়ে আলোচনা করতেই সোমবার স্বাস্থ্যভবনে বসেছিল পর্যালোচনা বৈঠক। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার ওষুধ নিতে আর সেই হাসপাতালে না গেলেও চলবে। বাড়ির কাছে যে কোনও সরকারি হাসপাতাল থেকে সেই বিনা পয়সার ওষুধ সংগ্রহ করতে পারবেন রোগী বা বাড়ির লোকজন।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যকর্তারা এক্সচেঞ্জ হওয়া প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের রিপোর্ট একত্রিত করে সবশুদ্ধ ২৯ বিষয়ে খামতি চিহ্নিত করেছেন। এই বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর অন্যতম হল, যে কোনও সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে মেডিসিন স্টোর থেকে ওষুধ আনার পর, দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ওষুধ নেওয়ার প্রয়োজন হলে বাড়ির কাছের হাসপাতাল থেকেও সেই ওষুধ নিতে পারবেন রোগীরা। কারণ, আগের হাসপাতাল থেকে শুধু প্রেসক্রিপশনের ওষুধ নিতে গিয়ে গোটা দিনই চলে যায় খেটে খাওয়া লোকজনের। বাড়ির সামনের হাসপাতালে সেই ওষুধ মিললে ভোগান্তি কমবে।
এছাড়াও আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন, মেডিক্যাল কলেজগুলির হস্টেলে সাফাই এবং নিরাপত্তা—এই দুই কাজের জন্য আরও বেশিসংখ্যক কর্মী পাঠানো হবে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে পিপিপি মডেলে চলা সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে’র নীতি নিয়মে সামঞ্জস্য রাখা হবে। মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে মহকুমা স্তর পর্যন্ত ৯৬টি বড় সরকারি হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার খামতি দূর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৬৬টি হাসপাতাল আদর্শ নিয়ম মেনে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা করেছে, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে জলের গুণমান পরীক্ষা আরও নিয়মিত করতে হবে। পরীক্ষা রিপোর্ট হাসপাতালে জনসমক্ষে টাঙানো থাকবে। রোগপরীক্ষা, রক্তপরীক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবা সহজে পাওয়ার জন্য আউটডোর টিকিটে বার-কোড লাগানো হবে। টিকিটের লাইন এবং দীর্ঘ অপেক্ষা কমাতে কিয়স্কে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে আউটডোর টিকিট কাটা বা ‘সেলফ টিকেটিং’ পরিষেবা চালুর করার কথা ভাবা হচ্ছে