তিনি জেলার দাপুটে নেতা। তিনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি তথা নদিয়া জেলা এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম এবং আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকার পর্যবেক্ষক। তিনি অনুব্রত মন্ডল। দলকে এতটাই ভালোবাসেন তিনি, মা মারা যাওয়ার পরে কিছুদিনের মধ্যেই যোগ দিয়েছিলেন দলের কাজে এমনকি মায়ের শ্রাদ্ধ থেকে সরাসরি এসেছিলেন নির্বাচনী সভায়।
শুক্রবার মঙ্গলকোটের নিগন চটি ময়দানে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে জনসভা করলেন অনুব্রত মণ্ডল। সভামঞ্চ থেকে দলের কর্মীদের নির্দেশ দিলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী যেন বুথের বাইরে থাকে। বুথের ভিতরে বাহিনী ঢুকলেই বুথ এজেন্টরা যেন সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে বিডিওদের জানান। প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে। তারপর আমরা যেমন ভোট করি, তেমনই ভোট করবেন”।
সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ আমি সেন্ট্রাল ফোর্সকে স্যালুট করি। তাঁদের বুথের বাইরে থাকার একশো ভাগ অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেনা যদি বুথের বাইরে ঢোকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করতে হবে। ১০০ কোম্পানি কেন, ৪০০ কোম্পানি সেনা মোতায়েন করলেও আমাদের জয় কেউ আটকাতে পারবে না”।
মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “নীরব মোদি ১৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল, তোমার লজ্জা লাগে না। তুমি গরিবের কোনও উপকার করোনি। তুমি ২০১৪ সালে ৪৪৪টি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলে। তুমি অসমে লোক তাড়াচ্ছ। এরপরেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উদ্দেশে বলেন, তুমি ধর্মীয় বিভেদ তুলে লোককে এনকাউন্টার করে মেরে দিচ্ছো। মানুষ তোমাকে কোনওদিন ক্ষমা করবে না। এরপরে অনুব্রতবাবু দলীয় কর্মীদের কাছে জোড়হাত করে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন”।
নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, “তুমি অনেক বড় বড় কথা বলে গিয়েছো। তোমার হিম্মত নেই আর তুমি ফিরে আসবে না। তুমি বেইমান। তুমি দেশের মানুষকে ঠকিয়েছো। তুমি দেশের মানুষকে কোনও কাজ দাওনি। তুমি কয়েকশো হাজার কোটি টাকা পার্টি অফিসে ভরে নিলে। তোমার মতো আর কেউ দেশে থাকলে, দেশকে অন্ধকারে নিয়ে যাবে। তোমার লজ্জা লাগা দরকার। তুমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করো। তুমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শিক্ষা নাও। তুমি দেশের মানুষের পয়সায় বিদেশ ঘোরো, লজ্জা লাগে না তোমার? তুমি চৌকিদার নও তুমি চোর। তাই বাবা বিশ্বনাথকে ডাকলেও তোমাকে ফেরাবে না”।
গরম উপেক্ষা করেও প্রচুর মানুষ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। গোটা বাংলা জুড়ে সব জায়গাতে যেভাবে মানুষ সরব হচ্ছেন বিজেপির বিরুদ্ধে তাতে বিজেপি ফিনিশ কার্যত সময়ের অপেক্ষা।