এর আগে নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত নেতা বিকাশ সিংহকে পাশে নিয়ে বসিরহাটে রোড শো করেছিলেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসু। আর এবার মনোনয়ন পেশের সময়ও সেই বিকাশকেই দেখা গেল তাঁর পাশে। বৃহস্পতিবার সায়ন্তন বারাসতে মনোনয়ন পত্র পেশ করতে এলে দেখা যায়, তাঁর অন্যতম প্রস্তাবক হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বিকাশ। এর ফলে ফের অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বসিরহাটের গেরুয়া শিবিরে।
গত মাসেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন ভোটে জিততে কোনও নীতি-আদর্শের তোয়াক্কা করবেন না তাঁরা। সেই মতো রাজনৈতিক সৌহার্দ্যতা ও যাবতীয় নীতি-আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়েই ভোটযুদ্ধ নেমে পড়েছে বিজেপি। এক জেল ফেরত আসামীকে সঙ্গে নিয়েই এবার ভোট ময়দান কাঁপানোর চেষ্টা করছেন সায়ন্তন। তবে এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে সায়ন্তনের জবাব, ‘আমার নামেও তো ১৪টি মামলা রয়েছে। বেশির ভাগই জামিন অযোগ্য ধারায়।’ তবে সায়ন্তন যাই বলুন, এই ঘটনায় গেরুয়া শিবিরকে একদিকে যেমন শাসক দলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে, তেমনি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরাও।
প্রসঙ্গত, বিকাশ যখন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ছিলেন। সেই সময়ই বসিরহাট রবীন্দ্র ভবনে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে এক কর্মিসভায় তাঁর বিরুদ্ধে সরব হন দলের নেতা ও কর্মীরা। এমনকি মঞ্চ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়েও দেওয়া হয় বিকাশকে। ওই আর্থিক কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর পরই দলের জেলা সভাপতির পদ খোয়াতে হয় বিকাশকে। এরপর তিনি বেশ কিছুদিনের জন্য গা ঢাকা দেন। তবে তাঁর খোঁজ পাওয়ার পর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। জেল হয় এই বিজেপি নেতার। ৪২০, ৪০৬ ধারায় অভিযুক্ত বিকাশের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছিল পুলিশ।
গতকাল বারাসতে মনোনয়ন পেশ করে সায়ন্তন যান কামদুনি গ্রামে। গতকাল সকাল ১১টা থেকে বসিরহাট হাইস্কুল মাঠে বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত হন। সমর্থকরা মাঠের মধ্যে ডিজে, তাসা, খোল-করতাল বাজিয়ে নাচানাচি শুরু করেন। তাতে হাই স্কুলের পঠন পাঠনের অসুবিধা হয়। অবশেষে স্কুল কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানালে নাচানাচি বন্ধ হয়। শুধু তাই নয়, গতকাল বেড়াচাঁপা পর্যন্ত মিছিলও করে বিজেপি। যার ফলে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গতকাল সায়ন্তনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাজানো হয় বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া বিজেপির বাতিল থিম সং। বাজানো হয় ডিজে-ও। দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের মনোনয়ন পেশের সময়ও একই দৃশ্য দেখা যায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।