মোদীর আমলে গণতন্ত্র নেই। দেশ জুড়ে এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। এবার দলের বিরুদ্ধে এমন ঘোরতর অভিযোগ তুলেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি ছাড়লেন কয়েক হাজার কর্মী৷ তাঁদের সবারই এক দাবি, ‘বাজপেয়ীর বিজেপিতে যে গণতন্ত্র ছিল, মোদীর আমলে তা নেই। এখন বিজেপি মানে বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি রাজনৈতিক দল। যেখানে শুধু রয়েছে একনায়ক তন্ত্র।’ বৃহস্পতিবার বিজেপির এই আদি সমর্থকরা সকলেই যোগ দিলেন বিজেপিরই শরিক দল শিবসেনায়। এমনকী, কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে শরিক শিবসেনার তরফে প্রার্থীও করা হয়েছে বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি কেনারাম মিশ্রকে। এবং তমলুক কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে শতদল মেটাকে।
সদ্য দলত্যাগী বিজেপির ওই পুরানো কর্মীদের অভিযোগ, ‘যাদের টাকা রয়েছে, তাঁরাই এখন বিজেপিতে পদ পায়। টাকা ছাড়া কোন কথা হয় না। বিজেপি এখন বড়লোকদের দল। শুধু তাই নয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি নিজেই বলেছেন, যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষিত লোকদের অভাব রয়েছে। এদিকে পুরনো, শিক্ষিত মানুষদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই পুরনোদের সঙ্গে নতুনদের একটা অংশ বিজেপি ছেড়ে শিবসেনা দলে যোগ দিয়েছে।’ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ভোট মরশুমে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেল গেরুয়া শিবির। এবং এক্ষেত্রে তাদের মাথাব্যথার কারণ খোদ শরিক দলই।
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের শিব সেনা দলের প্রার্থী তথা বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি কেনারাম মিশ্র জানান, ‘বিজেপি দলের সঙ্গে যখন কেউ ছিল না তখন আমরা কয়েকজন দলটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলাম এই এলাকায়। এখন দলের ভাল সময় চলছে তাই অন্যান্য দল থেকে লোক নিয়ে এসে বিভিন্ন পদে বসানো হচ্ছে। আর পুরানো দিনের কর্মীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বাংলায় তৃণমূলকে পরাজিত করার মতো শক্তি কখনও হয়নি বিজেপির। আমরা যেহেতু হিন্দু সংগঠনের কাজ করে এসেছি দীর্ঘদিন। তাই শিবসেনার মত সংগঠন ছাড়া আমাদের অন্য কোনও দল করার ইচ্ছে নেই। তাই কয়েক হাজার পুরনো ও নতুন বিজেপি কর্মীরা শিবসেনায় যোগ দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শিবসেনার তরফে প্রার্থী হয়ে বিজেপির কপালে ভাঁজ ধরিয়েছে দলের পুরনো কর্মীরাই। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, দলের প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তিনজন। ফলে সমগ্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এবার পদ্মের কাঁটা হয়ে উঠেছে শিবসেনা। বিজেপির মতো শিব সেনাও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হওয়ায়, সেই প্রভাব বিজেপির ভোটবাক্সে থাবা বসাতে পারে বলেই আশঙ্কা জেলার গেরুয়া শিবিরে। উল্লেখ্য, কয়েক বছর ধরে লাগাতার স্নায়ুযুদ্ধ চালিয়ে অবশেষে মহারাষ্ট্রে সমঝোতা করে লড়ছে বিজেপি-শিবসেনা। তবে বাংলায় বিজেপির সঙ্গে কোনও সমঝোতাতেই নারাজ শিবসেনা।