তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ তথা ঘাটালের তারকা প্রার্থী অভিনেতা দেব ধর্ম নিয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। বুধবার বিকেলে ময়ূরেশ্বরের মল্লারপুরে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য পেশ করেন দেব। সাধারণ মানুষের মধ্যে তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে উত্তেজনা ছিল দেখার মতো। দেবকে একবার দেখার জন্য মানুষের ভিড় উপচে পড়েছিল। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। অসিত মালের সমর্থনে দেব ছাড়াও এই সভায় হাজির ছিলেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরি, স্থানীয় বিধায়ক অভিজিৎ রায় প্রমুখ। ধর্ম নিয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে এদিনও ক্ষোভ উগরে দিয়ে দেব বলেন, “রাজনীতি আজ এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, বলা হচ্ছে, আপনারা যদি ভোট দেন, তবে রামমন্দির হবে। আপনারা হিন্দু? তা হলে এই দলকে ভোট দিন। আপনারা মুসলিম? তা হলে ওই দলকে ভোট দিন। ধর্ম নিয়ে এরকম রাজনীতি যারা করছেন, এই নির্বাচনে তাঁদের উপযুক্ত জবাব দেবে মানুষ। নইলে এই ধর্মের রাজনীতিতে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে”।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার কাটোয়ার দাঁইহাটে পূর্ব বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের সমর্থনে নির্বাচনী সভা করেছিলেন দেব। সেখানেও তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণাত্মক ছিলেন। তিনি বলেছেন, “এবারের ভোটে আমাদের মূল হাতিয়ার হল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়ন। এই উন্নয়নকে অস্ত্র করেই তৃণমূল রাজ্যে জিতবে। যারা শুধু ধর্ম–ধর্ম করে, দেশকে টুকরো টুকরো করতে চায়, রাজনীতিতে ধর্মীয় আবেগ জুড়তে চায়, দাঙ্গা করে, মানুষ মারে, তাদের ভোট দেবেন না। যিনি মানুষের কথা ভাবেন, সব সময় উন্নয়নের চিন্তা করেন, সেই মুখ্যমন্ত্রীর হাত শক্ত করে ধরুন”।
নাম না করে বিজেপি–কে নিশানা করে দেব বলেন, “আজ সেনাবাহিনীকে নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষকে নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না। এটা লজ্জার। সেনাবাহিনী দেশকে সুরক্ষা দেয়। সেই সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা উচিত নয়”। ভোটারদের উদ্দেশ্যে দেব জানান, “আপনাদের কাছে আমার আবেদন, যে দলের সরকার এই রাজ্যে আপনাদের জন্য উন্নয়নের কাজ করছে, সেই তৃণমূলের পক্ষে আপনাদের ভোটটা দিয়ে উন্নয়নের হাতকে শক্ত করুন। ভোট দেওয়ার আগে একবার ভাববেন, আপনার দেওয়া ভোটে দেশ যেন এগিয়ে যায়, বাংলা যেন এগিয়ে যায়, প্রত্যেক মানুষ যেন এগিয়ে থাকে। আপনাদের ভোটে যেন উন্নয়ন এগিয়ে থাকে। আমাদের আমাদের দল ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা আপনাদের পাশে আছে। যদি ২০১৯–এর নির্বাচনটা উন্নয়ন নিয়ে হয়, তা হলে আমরা ৪২–এ ৪২ পাব, এটা চোখ বন্ধ করে সবাই বলে দিতে পারে”।