ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কেশপুর তুমুল ভরসা যোগাচ্ছে তৃণমূলকে। ২০১৪ লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী দেবের লিড ছিল প্রায় ১ লক্ষ ১৭ হাজার! গত বিধানসভা ভোটে জয়ের ব্যবধান হয় প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার। তাই কেশপুর নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শাসক দল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি দলের কর্মীদের বলছিলেন, ‘‘গতবারে কেশপুর যে ভোট দিয়েছিল আমাদের, এ বার তার চেয়ে বেশি কিছু ভোট দিতে হবে। এটাই আমাদের আবেদন, অনুরোধ।’’ আর প্রকাশ্য সভায় অজিতের ঘোষণা, ‘‘গতবার দেবের লিড ২ লক্ষ ৬০ ছিল। এ বার ৩ লক্ষের উপরে চলে যাবে। একদম নিশ্চিত থাকুন!’’
মাস ঘুরলেই ভোট। কিন্তু কেশপুর নিরুত্তাপ। কেশপুর থেকে আনন্দপুর- সাত কিলোমিটার এই রাস্তার কোথাও বিরোধী প্রার্থীর দেওয়াল লিখন নেই। পতাকা, পোস্টার, ফেস্টুন নেই। দু’দিকেই শুধু তৃণমূলের পতাকা আর দেওয়াল লিখন। শুধু এই রাস্তা কেন, কেশপুরের সব রাস্তার ছবিটাই এক। মমতার অনুপ্রেরণায় যেভাবে দেব উন্নয়নে ভরিয়ে দিয়েছেন কেশপুরকে এর প্রতিদান যে ভোটবাক্সে দেবেন কেশপুরের মানুষ তা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন সকলে।
মোঘলযুগের আফগানশাসক শেরশাহের ভূমিরাজস্ব আদায়ের জন্য তৈরি হওয়া ভঞ্জভূম ও ব্রাক্ষ্মণভূম পরগনার যুক্ত অংশই হল আজকের কেশপুর। তমাল নদী এই দুই পরগনার সীমানা নির্ধারণ করেছে। একদিকে লাল পাথুরে মাটিতে শাল, শিমূল, মহুয়ার চিরসবুজ বনানী। অন্যদিকে তমাল, পারাং, কুবাইয়ের আশেপাশে শস্যশ্যামলা সমভূমি। একদা লালদুর্গ এখন সবুজগড়। আগে সিপিএমের বিরুদ্ধে ভোট লুঠের অভিযোগ উঠত। এখন মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে।
কেশপুরের বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন জানালেন, ‘‘লুঠপাট, মারপিট আর ভাল লাগে না। এলাকায় শান্তি থাকলেই হল।’’ আজহারের কথায়, ‘‘কত যে বোমা পড়েছে এই তল্লাটের গাঁ- ঘর- উঠোনে, তার ইয়ত্তা নেই। এখন গোলমাল নেই। এখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জন্যে অনেক কিছু করেছেন । এলাকায় শান্তি ফিরেছে”।