মহানাগরিকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কলকাতাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সুন্দর সবুজ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্রতী হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম৷ কলকাতার দূষণ কমাতে ভূগর্ভে জলস্তর বাড়াতে গাছ গাছালির সংসার সম্বৃদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন তিনি৷
শহরকে দুটি ভাবে ভাগ করা হয়েছে গ্রে এবং গ্রিন জোন। পুরনো কলকাতায় ১–১০০ ওয়ার্ডে যেখানে ফাঁকা জায়গা নেই বললেই চলে, সেখানে ভার্টিক্যাল গার্ডেনে জোর দেওয়া হবে। সরকারি আবাসন ও ভবনের দেওয়ালে এবং ইচ্ছুক ব্যক্তিরা বাড়ির দেওয়ালে আরোহী (ক্লাইম্বার) জাতীয় গাছ লাগানো হবে।
গ্রিন জোনের যেখানে কিছুটা জমি পাওয়া যাবে সেখানে গাছের ওপর জোর দেওয়া হবে মোটামুটি ১০১ থেকে বাকি ওয়ার্ডে৷ এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন বিধি প্রযুক্ত হওয়ায় অসুবিধা হচ্ছে। তিনি তবু নানা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রস্তুতি এমনভাবে রাখতে যাতে জুনের প্রথম দু সপ্তাহে ঝড় তুলে দেওয়া যায়।
মেয়র বলেছেন, “অনেকেরই মত ফল ফুলের গাছ। কিন্তু আমরা আগে চাই জল ধরতে, দূষণ কমাতে। শহরের শিশুরা যেভাবে ইনহেলার নিচ্ছে, তা আর দেখা যাচ্ছে না। এজন্য সরকারি ভবন, আবাসনের ছাদে বাগান করা হবে। বেসরকারি ভবন, আবাসন কর্তৃপক্ষকেও রুফটপ গার্ডেনের জন্য অনুরোধ করা হবে। এজন্য স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে। এই টার্মে তো আমার হাতে এক বছরের বেশি সময় নেই”।
ইতিমধ্যে মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ড. রথীন চক্রবর্তী ও ড. অশেষ লাহিড়ীর কিছু লেখা নিয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মেয়রের সবচেয়ে পছন্দ উঁচু দেবদারু। শিকড় সোজা গভীরে পা বাড়াবে। মাথা তুলবে অনেক উঁচুতে। এদিক ওদিক হাত বাড়াবে না। প্রচুর পাতা দূষণ টানবে। অরণ্য ও উদ্ভিদ বিশারদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে বর্ষার আগেই সাড়ে চার/পাঁচ ফুট উচ্চতার গাছ লাগান হবে। যাতে শেষ কৈশোরে পৌঁছে এইসব গাছ সব রকমের প্রতিকূলতা নিজেই সামলাতে পারে।
কলকাতার বেশিরভাগ জায়গায় ঠিকাদারেরা গাছের গোড়া পাথর বা সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছিল। ফলে গাছের গোড়ায় জল ঢুকত না। শিকড় শুকিয়ে কিম্বা পচে ঝড়ে টপাটপ গাছ পড়ে যেত। সেসব খুঁড়ে নতুন করে বাঁখারির বেড়া, বা চারদিকে মাটি রেখে পাথর বা ঢালাই বেদি করা হবে। দরকারে ফুটপাথ কেটেও জায়গা করা হবে। যাতে বর্ষায় কলকাতার বুকের ভিতর জলের আধার বাড়ে৷