সাংবাদিক সম্মেলনের মঞ্চেই অব্যবস্থার অভিযোগে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। কেন দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না সেই প্রশ্নও তোলেন অমিত। যা শুনে হাসছেন ওয়াকিবহাল মহল। তাঁদের কথায়, এরপর নিশ্চয় অমিত শাহ বুঝতে পারবেন দিলীপবাবু বাংলার বিজেপি কর্মীদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
সোমবার বাংলায় সভা করেন অমিত শাহ। তারপর করেন সাংবাদিক সম্মেলন। অমিতের প্রারম্ভিক বক্তব্য শেষ হতেই এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে প্রশ্ন করতে আরম্ভ করেন সাংবাদিকরা। অমিত শাহ দু’একবার বলেন, এক এক করে প্রশ্ন করুন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! তখনই মেজাজ হারান অমিত শাহ। জানা গেছে, অমিতবাবু আগেই দিলীপকে বলেছিলেন এক এক করে সাংবাদিকদের নাম ধরে ডাকতে। কিন্তু দিলীপ সে কথা শোনেন নি। সাংবাদিকরাও দিলীপের ডাকের তোয়াক্কা করেননি। বিজেপির পক্ষ থেকে যারা অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন তারাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না৷ এরপর আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি অমিত শাহ। দিলীপকে কটাক্ষের সুরে বলেন, একটু নামগুলো বলো না ভাই।
এখানেই শেষ নয়। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্যে সমান্তরাল সরকার চলছে৷ দুই অফিসারকে দিল্লী থেকে বাংলায় পাঠানো হয়েছে৷ আমরা বদলা নেব৷ আপনার বক্তব্য কী’? এই প্রশ্নে ক্ষেপে যান অমিত। সরাসরি বলে দেন, ‘আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি, বিতর্ক করতে চাইনা’। আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আপনারা ১৫০-এর বেশী আসন পাবেন না। আপনি কি বলেন’? রীতিমতো ক্ষেপে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘আপনারা প্রশ্নকে অতিরঞ্জিত করছেন’। এরপর সাংবাদিক সম্মেলন বন্ধ করে উঠে যান অমিত।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, অমিত শাহের জবাব দেওয়ার কিছু ছিল না। তিনি বুঝে গেছেন বাংলা থেকে বিজেপি ফসল ঘরে তুলতে পারবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সামনে চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছেন। গোটা দেশেই গেরুয়া শিবিরের আসন কমতে চলেছে। তাই সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেজাজ হারিয়েছেন অমিত শাহ। তাছাড়া এভাবে প্রকাশ্যে রাজ্য সভাপতির ওপর ধমকানোটাও সেই হতাশারাই বহিঃপ্রকাশ।