ভাড়া না বাড়িয়ে রেল কুড়ি বছর আগে বিকল্প আয়ের যে ‘নন ফ্রেট ইনকাম’-এর পথ খুঁজেছিল এতদিনে তা পূরণ হতে চলেছে। হ্যাঁ, ঠিক কুড়ি বছর বাদে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে হেঁটে আয়ের মুখ দেখতে চলেছে রেল। প্রথমবার রেলমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলকর্তাদের বলেছিলেন, ভাড়া না বাড়িয়ে আয়ের পন্থা খুঁজুন। সেই খোঁজ চলেছে প্রায় দু’দশক ধরে। রেলের জায়গা ভাড়া, বিজ্ঞাপন বোর্ড থেকে শুরু করে একাধিক পদ্ধতিতে কাজের কাজ হয়নি। এই প্রথম এমন এক পদ্ধতির সূচনা করল রেল যাতে লাভের মুখ দেখবে মন্ত্রক।
দক্ষিণ পশ্চিম রেলের ব্যাঙ্গালোর ডিভিশন ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে একটি সংস্থাকে নিয়োগ করেছে। চুক্তি মাফিক ব্যাঙ্গালোর ডিভিশনের ৩২ স্টেশনে বৈদ্যুতিন মাধ্যম যাত্রীদের ইনফরমেশন দেওয়া হবে। ‘রেল ডিসপ্লে নেটওয়ার্ক’ নামে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করবে ওই সংস্থা। যাত্রীদের ইনফরমেশনের সঙ্গে ওই মাধ্যমে প্রচার হবে বিজ্ঞাপনে। যা থেকে আয় হবে। ৩২ স্টেশনে একইভাবে নানা মাধ্যমে যা প্রচার হবে তা নিয়ন্ত্রণ হবে একটি কেন্দ্র থেকে যা হবে ব্যাঙ্গালোর সিটি ও যশবন্তপুরে।
বৈদ্যুতিন মাধ্যমে ৩২টি স্টেশনে তৈরি হবে তথ্য প্রচারের যে সব সামগ্রী তা বিভিন্ন স্টেশনে বিভিন্ন মাপের ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড। যা হবে মোট ৯২৪১ বর্গফুট। ৩১৭টি পঞ্চান্ন ইঞ্চির এলইডি স্ক্রিনের সিসিটিভি। যা মোট ৩২৪৮ স্কোয়ার ফিটের। ৬ ফুট বাই ৪ ফুটের ৮০টি এলইডি ভিডিও ওয়াল। মোট ৪৫৩৬ স্কোয়ার ফিটের। এছাড়া ৪০টি ডিজিটাল চার্ট। যা হবে মোট ৩২৮ স্কোয়ার ফিটের। ১০০টি টাচ স্ক্রিন। ৫৭টি ফেয়ার রিপিটার। ৩২ ইঞ্চির মোট ৫৪৪ স্কোয়ার ফিটের। সব কিছুই যাত্রীদের ইনফরমেশন দেবে। তাতে প্রদর্শিত হবে বিজ্ঞাপন।
সংস্থাটি সব অপারেশন নিজস্ব কেন্দ্র থেকে করলেও ট্রেনের যাবতীয় তথ্য সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করতে পারবেন স্টেশনগুলির মাস্টাররা। এজন্য তাঁদের কাছে পাম্পটপ টার্মিনাল থাকবে। যার মাধ্যমে তথ্য বদল করতে পারবেন তাঁরা। সংস্থাটি এই সবের জন্য নিজেরাই ২৪ কোটি খরচ করবে। রেলকে প্রতিবছর লাইসেন্স ফি হিসাবে দেবে ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। চার বছর পর থেকে প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে লাইসেন্স ফি বাড়াবে সংস্থাটি। ১০ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে সংস্থাটিকে। জানা গেছে, এর ফলে রেলের মোট আয় হবে ৫১ কোটি টাকা।