‘জম্মু ও কাশ্মীরের তিনটি প্রজন্মকে শেষ করে দিয়েছে আবদুল্লা ও মুফতি পরিবার। আপনাদের উচিত এবার ওই দুই পরিবারকে সরিয়ে দেওয়া। না হলে জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়ন অসম্ভব।’ গত রবিবার কাঠুয়ায় নিজের ভাষণে কাশ্মীরিদের এই বার্তাই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এরপর থেকে একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে। মোদী না হয় এই দাবি জানিয়ে গেলেন, কিন্তু সাধারণ কাশ্মীরিরা তাঁর এই বক্তব্যে সঙ্গে কতটা সহমত পোষণ করছেন?
[Total_Soft_Poll id=”5″]
প্রশ্নের খানিকটা উত্তর মিলল শঙ্করাচার্য মন্দির। আড়াই বছর ধরে সেখানে ডিউটি করছেম সিআরপিএফ জওয়ান নন্দকিশোর গুপ্তা। তাঁর বাড়ি বেনারস। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘মোদীজির জাদু এখানে কাজ করা খুব মুশকিল। বিজেপির হিন্দুত্ববাদের জন্যই কাশ্মীর থেকে ভাল ফল করা সমস্যাজনক।’ সোমবার ফারুক আবদুল্লার সমর্থনে কাশ্মীর পার্কে একটি জনসভা ছিল ওমর আবদুল্লার। সেখানেও দেখা গেল, বাবা-ছেলে দু’জনই মোদীকে তুলোধোনা করতে কোনও কসুর রাখেননি।
উল্লেখ্য, সপ্তাহখানেক আগেই কাশ্মীরের জন্য আলাদা সর্দার-এ-রিয়াসত (রাষ্ট্রপতি) ও উজির-এ-আজম (প্রধানমন্ত্রী)-এর দাবি করেছিলেন ওমর। তবে রবিবারের জনসভায় মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ফলে কোনওভাবেই ওই দাবি মানা সম্ভব নয়। তার জবাবে ওমর বলেন, ‘কাশ্মীর যদি ভারতের অঙ্গই হয়, তাহলে আপনি এখানে এলেন না কেন? আমরা তো খুবই ছোট একটা পার্টি। সর্বোচ্চ ছ’জন সদস্য সংসদে পাঠাতে পারি। এত ভয় কীসের যে প্রত্যেক মিটিংয়ে আমাদের নাম করে করে উত্তর দিতে হচ্ছে?’
কাঠুয়ার সভা থেকে পরিবারতন্ত্র বর্জন করারও ডাক দিয়েছিলেন মোদী। তার উত্তরে নাম না করে ওমর বলেন, ‘ওঁর স্মৃতিশক্তি এতটা খারাপ জানতাম না। পাঁচ বছর আগেও আপনি এই কথা বলেছিলেন। কিন্তু, তার কয়েকমাসের মধ্যে আপনি পিডিপি-র সঙ্গে কোলাকুলি করে এখানে সরকার গঠন করলেন। যে পরিবার তন্ত্রের কথা বলছেন, শেষ পাঁচ বছরে তার মধ্যে এক পরিবারের দু’জনকে তো আপনিই উজির-এ-আলা (মুখ্যমন্ত্রী) বানিয়েছেন।’
[Total_Soft_Poll id=”6″]
পরিবারতন্ত্রের জবাবে ছেলে ওমরের থেকেও এক ধাপ ওপরে সুর চড়িয়েছেন ফারুক আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘বিধানসভায় সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখে আমায় যে ফোন করেছিলেন, সেটা কি ভুলে গিয়েছেন? আমি এড়িয়ে যাওয়ায় ওমর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যাঁদের হাতে মুসলমানের রক্ত লেগে আছে, তাঁদের সঙ্গে জোট নয়। আর এখন পরিবারতন্ত্র শেষ করার কথা বলছেন কোন মুখে?’
সোমবার বিজবেহারায় নির্বাচনী প্রচার ছিল অনন্তনাগ কেন্দ্রের প্রার্থী ও পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতির। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথে তাঁর গাড়িতে হামলা করেন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা। তাদের ছোঁড়া পাথরে, মুফতি বেঁচে গেলেও কনভয়ের একটি গাড়ি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত হন এক ড্রাইভার। তার আগে স্থানীয় খিরাম দরগায় নমাজ পড়তে গিয়েছিলেন মেহবুবা।
সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ও মেরুকরণ করতে চেয়েছিলেন মোদী। ব্যর্থ হওয়ায় বালাকোট ড্রামা করলেন। তাতেও প্রথম দফার ভোটে সুবিধা করতে না পেরে বুঝতে পেরেছেন যে সরকারে আসা সমস্যার হয়ে যাচ্ছে। তাই ভুলভাল বকছেন।’ সেইসঙ্গে পুলওয়ামা কাণ্ডের তদন্ত চেয়ে তিনি বলেন, ‘মমতাদিদি, মায়াবতীজিরা ঠিকই বলছেন। তদন্ত হওয়া উচিত।’
[Total_Soft_Poll id=”7″]