কলেজ স্ট্রিটের পটুয়াটোলা লেনের জগন্নাথ বস্তিতে প্রায় তিনশো ওড়িশাবাসীর বাস এই এলাকায়। তখন দুপুরে গলির মুখের চা-জলখাবারের দোকানের ঝাঁপ ফেলা। সামনে পাতা বেঞ্চে বসে গল্প করছিলেন মধু লেঙ্কা, বিজয় পাত্র, বাসু খুন্টিয়া, ত্রিলোচন বিসওয়ালরা। কারও বাড়ি পুরী জেলায়, কারও কেন্দ্রাপাড়ায়। কেউ এ শহরে এসেছিলেন তিরিশ বছর, কেউ তারও আগে। প্রায় সকলেই পেশায় প্লাম্বার। কাজের জন্য এ শহরে থাকলেও অধিকাংশের পরিবার থাকে ওড়িশায়। কলেজ স্ট্রিট, শিয়ালদহ তো বটেই, শহরের অন্যান্য প্রান্তেও প্লাম্বিংয়ের কাজ করেন করেন তাঁরা। কেন্দ্রাপাড়াকে বলা হয় ভারতের ‘প্লাম্বিং ক্যাপিটাল’।
ভোটের আঁচ লেগেছে জগন্নাথ বস্তির দেওয়ালে। ঘাসফুল আর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা। পাশের চুনকাম করা দেওয়ালে দখলদারির চিহ্ন রেখেছে সিপিএম। ভোটের কথা উঠতেই মধু লেঙ্কা, বিজয় পাত্রদের সোজাসাপ্টা জবাব, “এখন তৃণমূলে দিই”। এখনও অনেকের ভোটার কার্ড ওড়িশায়। এখানে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বড় অংশ তৃণমূলেকে ভোট দিচ্ছে।’
এই মানুষেরা বলছেন, ‘বাড়ি থেকে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে বাস করি। বৌ-বাচ্চারা অনেকেই দেশে। এখানে কাজকর্ম করে খেতে হয়। এই বস্তিতেও তো জল, আলো সব ব্যবস্থা হয়েছে। ভালো কাজ করেছে তৃণমূল”। নিজেকে তৃণমূলের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেন লখিন্দর বিসওয়াল। জগন্নাথ বস্তি কমিটির নেতা তপনকুমার লেঙ্কা, প্রশান্ত বিসওয়ালও এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত। জানা গেল, কলকাতার ওড়িশাবাসীদের মধ্যে অনেকে তৃণমূলের কর্মী।