গতবারের লোকসভা ভোটের আগে থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া একাধিক প্রতিশ্রুতিই আজ জুমলায় পরিণত হয়েছে। তবে শুধু তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতিই নয়, তাঁর ঘোষিত একাধিক প্রকল্পও দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে জুমলারই সমান। কারণ মোদী সরকারের একাধিক প্রকল্পের কথা অনেকে শুনলেও তাঁর কোনও সুবিধাই পাননি তাঁরা। উচ্চবর্ণের জন্য উচ্চশিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ। ২ হেক্টরের কম জমি থাকলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের জন্য বছরে ৬ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান। আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড বিতরণ। লোকসভা ভোটের আগে এরকম একঝাঁক ঘোষণা করা হলেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সব সুবিধা যথাযথ সর্বত্র পৌঁছচ্ছে না বলে জানা গেছে। এ রিপোর্ট পেয়ে যেমন উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। তেমনি চিন্তায় বিজেপিও।
প্রসঙ্গত, বিগত আর্থিক বছরের সমাপ্তির পর কেন্দ্র খতিয়ে দেখছে দেশের কোথায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের হাল হকিকৎ কেমন। আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড বিতরণ একমাত্র অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু বাকি দুটি প্রকল্প সবেমাত্র একমাস আগেই ঘোষিত। কিন্তু সেগুলি ঘোষণা ও সংসদে পাশ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাস্তবায়িত হতে শুরু করার কথা ছিল। যেমন ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের পরই কৃষকদের ২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা কৃষি সহায়তার প্রথম কিস্তির। আর উচ্চবর্ণের জন্য সংরক্ষণেও বিশেষ করে এখন যেহেতু বিভিন্ন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভর্তির সময়সীমা শুরু হয়েছে তাই ওই সংরক্ষণের চাহিদা তুঙ্গে ওঠার কথা। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্য থেকে রিপোর্ট এসেছে প্রকল্পের কথা ঘোষণা হলেও তা থেকে কোনও সুবিধাই এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এর কারণ হিসেবে ভোটের কাজকেই দায়ী করছে কেন্দ্র। আসলে বিজেপির সবথেকে বড় উদ্বেগ হল যদি এইসব সুযোগ পেতে সমস্যা হয় তাহলে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে না দল। অবিলম্বে যাতে এই উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় সেটা নিশ্চিত করতে কিছুদিন আগেই সরকারিভাবে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বিস্তারিত বলা হয়েছে কীভাবে একজন উচ্চবর্ণের কর্ম ও শিক্ষাপ্রার্থী সংরক্ষণের সুবিধা নেবেন। তাঁকে দুটি ফর্মা পুরণ করতে হবে। পরিবারের বার্ষিক আয় ও জমির পরিমাণ সংক্রান্ত ফর্মপূরণের পাশাপাশি প্রমাণও পেশ করতে হবে। তবে ভোট মরশুমে মোদী সরকারের এই সক্রিয়তাকে ‘মরার সময় হরির নাম’ বলেই কটাক্ষ করছে রাজনৈতিক মহল।